দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

0 ৪৬৮

মশিউর রহমান, দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে সরকারি চাকুরি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন প্রকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।  বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারী ) সকাল ১১টায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। শুধু সরকারি চাকুরি নয়, ছাত্রলীগের পরিচয়ে সরকারি খাস পুকুর ও ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামেও চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবক অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহীনিতে কম্পিউটার অপরেটর পদে সার্কুলার হয়। ওই সার্কুলারে আরিফুলের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে ছাত্রলীগ নেতা আতিক। এমনকি চাকুরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে বলে আরিফুলকে সংগে নিয়ে ঢাকায় যেতে হবে। সেখানে স্যারকে কিছু টাকা দিতে হবে। এমন কিছু তথ্য দিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আতিক আরিফুলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়।

 

এরপর আরিফুলকে নিয়ে ঢাকায় যায় আতিক। ঢাকায় গিয়ে তিনদিন ধরে বিভিন্ন অলিতে গলিতে ঘুরিয়ে ভুলভাল বুঝিয়ে আরিফুলকে বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর থেকে দীর্ঘ এক বছর চাকুরি হবে হচ্ছে বলে দিন পার করতে থাকে ছাত্রলীগ নেতা আতিক। এক বছর পর পুণরায় নতুন করে টাকা দাবি করে আতিক। টাকা না দিলে চাকুরীও হবেনা আবার আগের টাকাও ফেরত দিবেনা বলে জানিয়ে দেয় আতিক। সংবাদ সম্মেলনে পানানগর গ্রামের মুকুল হোসেন নামের আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ সরকারি খাস পুকুরের শর্ত মেনে লীজ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ করে আসছেন তিনি।

 

কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি হঠাৎ করেই আতিক তার পুকুরে উপস্থিত হয়। পরে তারা পুকুরের চারপাশে নেটজাল দিয়ে বেড়া দিয়ে আসে। পরের দিন পুকুরে খাবার দিতে গিয়ে বিষয়টি দেখতে পেয়ে আতিকের সাথে যোগাযোগ করলে আতিক তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তাকে ১০ হাজার টাকা দেন মুকুল। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে আতিক তার বিরুদ্ধে স্থানীয় কিছু মানুষকে দিয়ে তাকে ভয়ভীতি ও হুমকী দিতে থাকে। এমনকি আতিককে টাকা না দেয়ায় পুকুরের মাছ ধরতেও মুকুলকে বাধা দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

 

উপজেলা যুবলীগের ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক আলামিন সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক তার কাছ থেকে গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারী তাকে বেধড়ক মারপিট করে নগদ ২ লাখ ১৪ হাজার টাকা, ২টা মোবাইল ফোন ছিনতাই করে নেয়। ওই ঘটনায় সে আতিক সহ তিনজনকে আসামী করে রাজশাহীর আদালতে মামলাও দায়ের করেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন আছে। বর্তমানে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকীও দেয়া হচ্ছে বলেও সংবাদ এসব অভিযোগ করেন আলামিন। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা আতিকের বিরুদ্ধে অন্যের জমি দখল, ফসলি জমিতে পুকুর খনন করতে গেলে কৃষকদের কাছে চাঁদা দাবিরও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

শুধু তাই নয় আতিকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিরও অভিযোগ করেন ভুক্তভুগিরা। এসময় ভুক্তভুগিরা বলেন,গত বছর উপজেলার বাশাইল গ্রামের এক বউকে অনৈতিক প্রস্থাব দেন। তাতে রাজি না হলে মোটা অংকের দাবি করেন। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাধারন ভুক্তভুগিরা নানান অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগ নেতা আতিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সহ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আলামিন, ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলাম, মুকুল হোসেন ছাড়াও ১০থেকে১৫ জন উপস্থিত ছিলেন।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.