নওগাঁয় গারোল প্রজাতির ভেড়া চাষের উজ্জল সম্ভবনা

0 ২,২৩৩

mail.google.comলোকমান আলী, নওগাঁ : দেশীয় ভেড়া যেখানে সর্বোচ্চ ১৫থেকে ২০কেজি মাংস পাওয়া যায়। সেখানে গারোল প্রজাতির ভেড়া ৫০থেকে ৭০কেজি মাংস পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। নওগাঁয় বানিজ্যক ভাবে গারোল প্রজাতির ভেড়া চাষ দিন দিন জন প্রিয় হচ্ছে। অধিক মাংস, ভালো বাজার দর, রোগ বালাই কম ও সহজে পতিপালন করা যায় বলে এর ব্যাপক কদর রয়েছে। সরজমিনে গিয়ে জান গেছে, নওগাঁর কয়েকটি গারোল খামার ঘুরে দেখা গেছে অত্যান্ত লাভ জনক এ ভেড়া বানিজ্যক ভাবে চাষ করতে এগিয়ে আসছে বেকার শিক্ষিত যুববকরা। জেলার সদরের রামভদ্র পুর বাইপাশ এলাকার ইসমাইল হোসেন। তার খামার ঘুরে দেখা গেছে গারোল ভেড়া চাষে নেই কোন উন্নত শেড পদ্ধতি বা বারতি খরচ। ৪বছর আগে মাত্র দ’ুটি গারোল ভেড়া দিয়ে ইসমাইল তার যাত্রা শুরু করে। এখন তার রীতিমত একটি খামার গড়ে উঠেছে। বর্তমান তার খামারে রয়েছে ৭০টি ছোট বড় গারোল ভেড়া। ইসমাইল জানান, ২৭হাজার টাকা দিয়ে একটি মাদি ও দুটি খাসি ভেড়া সংগ্রহ করে কারবার শুরু করি। মাত্র ৭মাসে এ দু’টি ভেড়া থেকে আরো দু’টি বাচ্চা দেয়।
এভারে দু’টি থেকে ৪চার থেকে ৮বাড়তে থাকে ভেড়ার সংখ্যা। স্থানীয় বাইপাস সড়কের এক পাশে একটি লেদ মেশিন পরিচালনা করার পাশাপাশী এ ভেড়ার খামার গড়ে তোলে ইসমাইল। ৪ মেয়ের মধ্যে ৩মেয়ের বিয়ে হয়েছে। দিনে লেদ মেশিনে কাজ করার ফাঁকে ছেড়ে দেয়া ভেড়া গুলো নজরে রাখে। এভারে ভেড়ার ক্রমাগত বৃদ্ধি আজ ইসমাইল কে প্রতিষ্টিত খামারী বানিয়ে দিয়েছে। তিনি জানান, দেশীয় ভেড়া যেখানে ২০কেজি মাংস পাওয়া কঠিন ব্যাপার সেখানে গারোল প্রজাতির এ ভেড়া থেকে ৬০কেজি পর্যন্ত মাংস পাওয়া সম্ভব। একটি ভেড়া ১৪মাসে দু’বার বাচ্চা দেয়।
প্রতিবার দু’থেকে তিনটি পর্যন্ত বাচ্ছা পাওয়া যায়। এসব ভেড়া মাঠে ঘাস সহ গমের ভুষি ও খৈর খায়। এর ফলে বারতি খরচ একেবারেই নেই। আসছে ঈদে ইসমাইল ইতোমধ্যে ৩০টি ভেড়া বিক্রি করেছে। এসব ভেড়া বড় আকারে খাসি ও পাটা বিক্রি হয়েছে একেকটি ২৮থেকে ৩২হাজার টাকায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এ ভেড়ার নেই কোন রোগ বালাই। গারোল ভেড়াকে বানিজ্যক ভাবে চাষের সম্ভবনা নিয়ে কাজ করছে জেলার প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর।
এ অধিদপ্তরের গারোল ভেড়া প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাবিবুর রহমান সম্প্রতি ইসমাইলের খামার পরিদর্শনে এসে জানান, এটা অত্যান্ত লাভ জনক এবং বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চাষ উপযোগী। তিনি বলেন আমরা পরীক্ষা মুলকভাবে এ ভেড়ার চাষ যে কয়েকটি এলাকায় শুরু করেছি সব জায়গায় সফল হয়েছে। তিনি বলেন, এ ভেড়ার মাংস অতান্ত সু’স্বাদু এবং তৈলাক্ত কম থাকায় সব শ্রেনী মানুষ পছন্দ করে থাকে। একটি বড় আকারের গারোল ভেড়া উচ্চতায় ৪ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদিকে এ ভেড়ার লোম সংগ্রহ করে বাজিন্যক ভাবে বিক্রির সুযোগ আছে বলে জানান, ভেড়া প্রতিপালন কারী ইসমাইল হোসেন। নওগাঁ সদর উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহফুজুর রহমান জানান, আমরা গারোল ভেড়া চাষে উন্নত প্রশিক্ষন সহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছি। যদি কেউ বানিজ্যক ভাবে এ ভেড়া চাষে এগিয়ে আসে তার তেমন কোন মুলধন বা বড় কোন অবকাটামোর প্রয়োজন নেই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.