নদী বয়ে আসা প্লাস্টিক বর্জ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে মৃত সাগরের

১৮৫

শ্রীলঙ্কার পাশে বঙ্গোপসাগরে আরেক মৃত সাগর সৃষ্ট হতে পারে, যার ভুক্তভোগী হবে সার্কভুক্ত ছয়টি দেশ; একথা বলছেন পরিবেশবিদরা। বাংলাদেশসহ সার্কভুক্ত আটটি দেশ ছাড়াও মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া এ সংক্রান্ত ঝুঁকিতে আছে। সংবাদ সূত্র: A24 News Agency

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া মৃত সাগরের গভীরতা ১০০ থেকে ৪০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটি প্রায় ৬০০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে। আঞ্চলিক দেশগুলি নদীপথ পরিশোধিত না করেই সমুদ্রে প্লাস্টিক, পলিথিন, নাইট্রেট, ফসফেট এবং গোবর ছেড়ে দেয়। যার ফলে বর্জ্যগুলো সক্রিয় হয়ে উঠে আর অক্সিজেনের মাত্রা বৃহৎ আকারে হ্রাস পেয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

পরিবেশবিদ চামিরা হিনিদুমা থেকে জানান, ”সম্প্রতি আমরা জেনেছি যে বঙ্গোপসাগরে এক মৃত সাগরের সৃষ্টি হয়েছে, যা ৬০০০ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এর গভীরতা ১০০ থেকে ৪০০ মিটার। সামনের দিনগুলোতে নিশ্চিতইভাবেই এটা আরও বড় হবে। মৃত সাগরের সৃষ্টি হয়েছে অক্সিজেনের অভাবে প্রাণের বিনাশ থেকে। এ অক্সিজেন শূন্যতার সৃষ্টি হয় পলিথিন, প্লাস্টিক ইত্যাদি থেকে। ”

যথাযথ ব্যবস্থাপনা ছাড়াই আঞ্চলিক দেশগুলো বছরের পর বছর ধরে নদীপথে প্লাস্টিকসহ বর্জ্য সমুদ্রে ফেলাতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে পরিবেশবিদরা উল্লেখ করেছেন। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক দিলেনা পাত্রাগোদা বলেছেন, ”ময়লা- বর্জ্যরে অযথাযথ নিষ্কাশনের দ্বারা এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এগুলো নর্দমায় ফেলে যা পরে নদীতে চলে আসে কারণ মিউনিসিপাল কাউন্সিলগুলো এগুলো ঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ করে না। পরে নদী হয়ে এগুলো সমুদ্রে আসে।”

এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি আঞ্চলিক নেতাদের দৃষ্টি আর্কষণ করেন। পাত্রাগোা জোর দিয়ে বলেন, ”সারাবিশ্বে জুড়েই মিলিয়ন মিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে। যাই হোক, এর সামান্যই সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। শুধুমাত্র শতকরা ১-২ ভাগ ঠিকমতো প্রক্রিয়াকরণ এবং পুন:ব্যবহৃত হচ্ছে। এর হার বাড়াতে হবে।”

এ দূষণ এ অঞ্চলের সামুদ্রিক জীবন নিম্নমুখী করার পাশাপাশি মৎস্য সম্প বৃদ্ধি ও পর্যটন শিল্পে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া, খাদ্য শৃঙ্খলেও প্লাস্টিক যুক্ত হচ্ছে এবং সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার সময় তা প্রবেশ করছে মানুষের দেহে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।বর্তমানে সার্কভুক্ত অঞ্চলের দেশগুলির মাধ্যমে গৃহীত সমন্বিত সিদ্ধান্তের দ্বারা এই ক্ষতি হ্রাস করা যেতে পারে। এজন্য আঞ্চলিক সরকারগুলিকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে।

Comments are closed.