নাচোলে জমিজমা বিরোধের জেরে দুই ব্যাক্তিকে পিটিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা

0 ১৭২

নাচোল প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে জমিজমা বিরোধের জেরে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। আহতরা রামেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৩ব্যক্তিকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।

নাচোল থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, গত ১৯ জুলাই সোমবার সকাল আনুমানিক ৮টার সময় উপজেলার নাচোল ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে আনসারুল ও ছোট ছেলে সাফিউল তার তার বাড়ীর পাশে নিজ জমিতে ঢেঁড়শ ও পাটের শাক তুলার সময় একই গ্রামের বিবাদিরা জমিজমার পূর্ব শত্রুতার জেরে মৃত জমিরুদ্দিন এর ছেলে সাদিকুল ইসলাম(৪৫)ও ময়েজ উদ্দিন(৫০),মৃত ইমাজউদ্দিন এর ছেলে জবেদ আলী(৪৫),মৃত আমিন মন্ডল এর ছেলে মহির উদ্দিন(৫৫),সাদিকুল ইসলামের ছেলে মাসুম রেজা(২৫),মনি(২২),জবেদ আলীর ছেলে রনি(২৩), মহির উদ্দিন এর ছেলে বাবুল(৩৫),নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফ(২৮) ও মৃত আমিন এর ছেলে নজরুল (৪০) ধারালো লোহার বল্লম, হাসুঁয়া, দা, লোহার সাবল,বাশেঁর লাদনা দিয়া আনসারুল ও শফিউলকে বেধড়ক মারতে থাকে।

এতে করে আনসারুল ও শফিউল গুরত জখম হয়। আনসারুলের স্ত্রী সেলিমা বেগম ওই ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে জানান, আসামী সাদিকুল ইসলাম অন্যান্য আসামীদেরকে হুকুম দিয়া বলে যে,“দেখছিস কি; মার শালারাকে;মেরে হাত পা ভেঙ্গে ফেল; যাকিছু হয় দেখবো।” এই হুকুম পাওয়া মাত্রই মহিরুদ্দিন এর হাতে থাকা ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে আমার স্বামী-আনসারুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারে কিন্তু উক্ত কোপ আমার স্বামী তার বাম হাত দিয়া আড়াইলে মধ্যকার লম্বা আঙ্গুলটি কেটে ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয় ও বামহাত গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয় ।

ওই সময়ে জোবেদ আলী তার হাতে থাকা লোহার সাবল দিয়া আমার স্বামী-আনসারুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ডান পায়ে হাটুর নীচে কোপ মারতে থাকে ফলে ডান পা ভাঙ্গিয়া হাড় বিচ্ছিন্ন হয়। তারপরে সাদিকুল তার হাতে থাকা ধারালো লোহার বল্লম দিয়া আমার স্বামী-আনসারুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাম পায়ে হাটুর নীচে কোপ মারতে থাকে ফলে আমার স্বামী-আনসারুলের বাম পা ক্ষত বিক্ষত হয়ে রক্তাক্ত ও জখম হয়ে কয়েক টুকরায় ভেঙ্গে হাড় বিচ্ছিন্ন হয়।

ওই সময়ে আমার স্বামীকে রক্ষার জন্যে আমার সন্তান সাফিউল আগাইয়া গেলে ময়েজ উদ্দিন এর হাতে থাকা লোহার ধারালো দা দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আমার সন্তান সাফিউল এর ডান পায়ে হাটুর নীচে কোপ মারতে থাকে ফলে ডান পা গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। পরে নজরুল ইসলাম এর হাতে থাকা লোহার বল্লম দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ও পঙ্গু করার উদ্দেশ্যে আমার সন্তান সাফিউল এর বাম পায়ে হাটুর নীচে কয়েকটি কোপ মারার ফলে তার বাম পা গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয় এবং রগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।

অন্যান্য বিবাদি মাসুম ও মনি আমার জখমী স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্যে বুকে ওপর বসে গলা চেপে শ্বাসরোধ করিলে গোঁ গোঁ শব্দ করে। অপরদিকে, রনি ও বাবলু আমার সন্তানের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্যে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বুকে বসে তাদের হাত দিয়া গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্ঠা করে।

আরিফ তার হাতে থাকা বাশেঁর লাদনা দিয়া আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম হয় এবং সে তার পরপরেই আমার সন্তান সাফিউলকেও হত্যার উদ্দেশ্যে তার ডান পায়ের গোড়ালীতে ঐ বাশেঁর লাদনা দিয়া আঘাত করে হাড় ফাটাইয়া গুরুতর জখম করে।

পরে এলাকাবাসী তাদের চিৎকার চেচামেচি শুনে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসিরা ঘটনা স্থল থেকে চলে যায়। পরে আমার স্বামী সন্তানকে উদ্ধার করে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।

বর্তমানে তাদের ভাঙ্গা হাত-পা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করে প্লাস্টার করা হয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে। আনসারুলের স্ত্রী সেলিমা বেগম আরো জানায়, তিনি বাদী হয়ে গত ২২জুলাই নাচোল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নাচোল উপজেলা শাখার সভাপতি এ্যাডঃ মোস্তাফিজুর রহমান বুলেট জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও ন্যক্কারজনক। এই বর্বারোচিত সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি, সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।

নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, এব্যাপারে নাচোল থানায় একটি মামলা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪জুলাই ৩জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.