নিয়ামতপুরে বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে দিলেন

২০৬
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: ক্যালেন্ডারের পাতা বলছে আষাঢ় মাস শেষ হয়ে পার হতে চলল শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহও। কিন্তু দেখা নেই বৃষ্টির। এই অবস্থায় বৃষ্টির আশায় গ্রাম বাংলার প্রাচীন রীতিপালন করে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অভিনব ভাবে ব্যাঙের বিয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন।
শুক্রবার (২২ জুলাই) সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত রং মেখে নেচে গেয়ে চলে বিয়ের অনুষ্ঠান। ব্যাঙ বর-কনের বিয়ে পড়ান স্থানীয় পুরোহিত শ্রী বৈশাখ পাহান।
আয়োজকেরা জানান, জনশ্রুতি রয়েছে ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। আর সেই কারণে গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অভিনব ভাবে এই বিয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ক্যালেন্ডারের পাতা বলছে আষাঢ় মাস শেষ হয়ে পার হতে চলল শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহও। কিন্তু রোপা আমন ধান চাষ করার মত পর্যাপ্ত পানি জমিতে নেই , এবং অনাবৃষ্টির ও খড়ার কারণে কৃত্রিম ভাবে জমিতে পানি দিয়ে পানি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। যে জমি গুলোতে চারা রোপণ করা হয়েছে, সে জমিগুলো পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অনাবৃষ্টির হাত থেকে মুক্তি পেতে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
পুরোহিত বৈশাখ পাহান বলেন, ‘অনাবৃষ্টি ও খরা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে শিশুরা এই ব্যাঙের বিয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা পরে উৎসবে রূপ নেয়। বড়রাও যোগ দেন। আমাদের বিশ্বাস এই ব্যাঙের বিয়ের মধ্য দিয়ে অনাবৃষ্টি ও খরা কেটে যাবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা বৈশাখ পাহান বলেন, ‘অতীতেও এভাবে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার পর জলের দেখা মিলে ছিল। এবারও সে আশা থেকেই এই আয়োজন করা হয়েছে। গতবার ব্যাঙের বিয়ের দিন দুপুর থেকেই বৃষ্টি হয়েছিল।’
এ বিষয়ে ব্যাঙ বরের মা প্রতিমা বলেন, অনেক বছর ধরে দেখে আসছি অনাবৃষ্টি হলেই এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করে। অনেক সময় বৃষ্টিও হয়েছে। তাই মানুষের কাছে এক প্রকার বিশ্বাস হয়ে গেছে, ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টি হবে। সেই আশাতেই ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে ভগবানের কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করতেছি।

Comments are closed.