পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর দুখুর পাশে দাড়ালো উপজেলা প্রশাসন

৩৩৯

রৌমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: পা দিয়ে লেখেই চলছে দুখুর পড়াশোনার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর দুখুর পাশে দাড়ালো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান। গত কয়েকদিন থেকে প্রতিবন্ধি দুখু পা দিয়ে লেখা নিয়ে দৈনিক পত্র পত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।

পরবর্তীতে বুধবার বিকালের দিকে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, স্থানীয় মেম্বার, উপজেলা সমাজসেবার প্রতিনিধি, বকবান্দা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সাংবাদিক দুখুর বাড়িতে গিয়ে দুখুর পাশে দাড়ান। এ সময় দুখুর পা দিয়ে লেখা স্বচোখে দেখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

দুখুর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সার্বিক খরচের দায়িত্ব নেন উপজেলা প্রশাসন। তার পায়ের লেখা দেখে উপস্থিত সকলেই আশ্চার্য হন। ইতোমধ্যে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে দুখুর নামে শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধি ভাতার নাম দেওয়া হয়েছে এবং সে এই সুবিধা ভোগ করছে। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষা উপকরণ, চার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী ও হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে।

বকবান্দা বহুমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বিএসসি বলেন, দুখু আমার স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার পড়ালেখার দিকে খুবই আগ্রহ রয়েছে। সে প্রতিদিন অনেক কষ্ট করে অন্যের সহযোগিতায় স্কুলে আসে। আমি সম্পন্ন বিনা খরচে তার পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছি।

উপজেলা সমাজসেবার ফিল্ড সুপার ভাইজার আব্দুল্লাহ হেল কাফী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানান, দুখুর নামে শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, দুখু ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়,আমি তার জন্য দোয়া করি,সে ইঞ্জিনিয়ার হবে। তাছাড়া পড়াশোনা করতে সার্বিক সহযোগিতা করবো আমার উপজেলা পরিষদ থেকে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুখুর লেখাপড়ার সমস্ত খরচ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তার জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, প্রতিবন্ধি ভাতা, শিক্ষা উপকরণ, খাদ্য সামগ্রী ও হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার পরিবারের খাদ্য নিশ্চিত করতে ভিজিডি কার্ড করে দেওয়া হবে এবং সরকারি সকল সুবিধা সে পাবে।

শাররিক প্রতিবন্ধি মেধাবী ছাত্র মো. দুখু মিয়া (১২)। বর্তমান বকবান্দা দ্বিমুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। পরিবারের সকলের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে আসছে। তার আশা অনেক পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হওয়া। দুখু মিয়া কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বকবান্দা গ্রামের খেটে খাওয়া আলমাছ আলীর প্রথম ছেলে। তার মা গুলেনুর বেগম। দুখুর ছোট ভাই আল আমিন ও ছোট বোন আলফুলি খাতুন।

Comments are closed.