ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান

0 ৯৯২

মহানগরীতে ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন বন্ধে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, দৈনিক বাংলা ও মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ফিটনেসবিহীন দুটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি লেগুনা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অপরাধে ৭৫টি মামলা ও ৮৭ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। নগরের যানজট ও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিএ), ঢাকা জেলা প্রশাসন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সহযোগিতা করছে। ডিএসসিসি জানিয়েছে, অভিযানে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার দায়ে ওই সাতজন গাড়িচালককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্য মতিঝিলে সফিকুল ইসলাম ও বাবুল হোসেন নামের দুই বাসচালককে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেন ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন সরদার। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কামাল, জুয়েল, শুক্কুর, সুলতান, খলিল নামে আরও পাঁচ চালককে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সালাম। এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া, বাসের আসন নোংরা-ভাঙাচোরা থাকা এবং ভাড়ার তালিকা, রুট পারমিট, রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন না থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৭৫টি মামলা ও জরিমানা করা হয়। আগামী ১৪ কর্মদিবস পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান চলবে বলে জানানো হয়। তবে এই অভিযানের ফলে মতিঝিল এলাকায় গণপরিবহনের সংখ্যা অনেক কম ছিল বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
গতকাল বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিদর্শন করেন ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এ সময় তিনি যাত্রীবাহী বিভিন্ন বাসে উঠে যাত্রীদের সেবার বিষয়ে বাসচালকদের সচেতন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, লাইসেন্সবিহীন গণপরিবহন চালক, পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে নাগরিকদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া যত্রতত্র যানবাহন পার্ক করায় শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গণপরিবহনব্যবস্থায় সুষ্ঠু শৃঙ্খলা না আসা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বিআরটিএর আইন অনুযায়ী ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলে গণপরিবহন চালকদের আইনের আওতায় আনা হবে। পরিবহনশ্রমিকদের পক্ষ হয়ে কেউ বাধা দিলে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সাঈদ খোকন বলেন, পরিবহনশ্রমিকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় তাঁরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান। এতে প্রতিদিনই গণহারে মানুষকে প্রাণ দিতে হয়। এ ছাড়া তাঁরা যাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহারও করেন না। সিটিং সার্ভিসের ভাড়া নিয়ে লোকাল বাসের মতো চালান। এসব অনিয়ম বন্ধে সবার আগে পরিবহনমালিকদের সচেতন হতে হবে।
দৈনিক বাংলা মোড়সংলগ্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদ এলাহী। বেলা সাড়ে ১১টায় দেখা যায়, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় তাঁর আদালতে সিএনজিচালিত তিনটি অটোরিকশাচালককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তৌহিদ এলাহী প্রথম আলোকে বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রুট পারমিট না থাকায় এই জরিমানা করা হয়। মতিঝিল সিটি সেন্টারের সামনে ফিটনেসবিহীন ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-২০১৬ নম্বরের একটা বাস জব্দ ও এর চালককে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন পৃথক আরেকটি ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই আদালতে ১৬টি বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়। জরিমানা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৯০০ টাকা। এই আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন সরদার বলেন, বিআরটিএ আইন অনুযায়ী বিভিন্ন দায়ে এই মামলা ও জরিমানা করা হয়। জব্দ করা গাড়িটি ট্রাফিক পুলিশের ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে আবার অভিযান শুরু হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.