পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: উন্নত দেশে ২০৪১ সাল টার্গেট রেখে বাংলাদেশে কোন গৃহহীন বা ভুমিহীন থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ধসঢ়; এনডিসি। শনিবার বেলা ১১ টার দিকে রাজশাহী জেলার পুঠিয়ার কান্দ্রা গুচ্চুগ্রামে হযরত শাহ মাখদুম (রাহঃ) আশ্রয়ণ প্রকল্প ও বারইপাড়ার তালুকদারগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন ও শীতবস্ত্র বিতরণ কালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা ৩য় পর্যায়ে নির্মাণাধীন গৃহসমূহ পরিদর্শন ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। বর্তমানে পুঠিয়া উপজেলাতে ১৮০টি গৃহ নির্মাণাধীন রয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক, পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু, পুঠিয়া সার্কেল অফিসার ইমরান জাকারিয়া, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা) অভিজিৎ সরকার, পুঠিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ খান ঝন্টু সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ, পিএএ।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি বলেন, পুঠিয়া উপজেলায় কান্দ্রা আশ্রায়ণ প্রকল্পের প্রায় এখানে ৫৬টি ঘরের কাজ যেটি আগামী মাসেই শেষ হবে। এটা তৃতীয় পর্যায়ের প্রকল্প। আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার ছিল দেশবাসীর কাছে এই দেশে কেউ থাকবে গৃহহীন না। এটি জেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নিবার্হী অফিসার তারা সারা বছরে জেলায় সাড়ে চার হাজার ভুমিহীন বা গৃহহীনদের তালিকা করেছেন। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে কিছু, দিত্বীয় পর্যায়ে কিছু ইতিমধ্যে পুরণ হয়ে গেছে এবং তরা খুব সুখে শান্তিতে আছে।
তৃতীয় পর্যায়ে আমাদেরকে টার্গেট দিয়েছে ২৬মার্চ মধ্যে স্বাধীনতা দিবসের আগে এদেরকে যারা গৃহহীন বা ভুমিহীন আছেন তাদের ঐ তালিকা অনুযায়ী গৃহ নিমার্ণ করে সুখে শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ দেওয়া হোক। আর মুজিব বর্ষে এই বছরের মধ্যে বাকি ঘরগুলি বাকি ভুুমিহীন বা গৃহহীন যারা আছে তাদের কে করে দিতে হবে। যেটা অঙ্গীকার অঙ্গীকার পূর্ণ বাস্ত বায়নে কিন্তু আমরা প্রশাসনে যারা আছি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আছে তাদের সকলকে সাথে নিয়ে বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছি।
আমরা জানি মুজিব বর্ষে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আসলেই কেউ ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না। আমরা যে টার্গেট দিয়েছি উন্নত দেশে ২০৪১ সাল ঐ টার্গেট রেখে এইটা টার্গেট যে এই দেশে কোন গৃহহীন বা ভুমিহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এটি দেখার জন্যই কিন্তু আমার সরজমিনে এসেছি। এবং কাজের মান খুব ভালো। আশা করি এই কাজের মান এবং দক্ষতা বজায় রেখে কাজ করলে আগামী মাসের মধ্যে সম্পুন্ন হয়ে যাবে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে নির্বাচনে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করেন। তার পরপর তৃতীয় বারের মত একটা ঘোষণা ছিল যে, এই মুজিব বর্ষে বাংলাদেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রে কোন দেশের প্রধান এমন ঘোষনা দেননি, যে কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। তারই প্রেক্ষাপটে তিনি আমাদের একটি নির্দেশ দিয়েছেন। যে প্রতিটি জেলায় প্রতিটি উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিটি গ্রামে যারা ছিন্ন মূল গৃহহীন ভুমিহীন মানুষ আছে, তাদের তালিকা বের করার জন্য এবং তাদের সেই তালিকা সরকারের নিকট প্রেরণ করার জন্য। আমরা আমাদের এই রাজশাহী জেলাতে ভুমিহীন দুই ধরনের একটা আছে ‘ক’ শ্রেণীর একটা আছে ‘খ’ শ্রেণীর। ‘ক’ শ্রেণীর মালিক হচ্ছে যার জায়গা জমি ঘর বাড়ি কিচ্ছু নাই, একেবারেই নিঃশ্ব।
আর খ শ্রেণীর হচ্ছে যার একটু জাইগা আছে কিন্তু ঘর নাই। একবারেই গৃহহীন জমি জাইগা নাই ভুমিহীন ছিন্নমূল সেই তালিকা অনুযায়ী আমার এই জেলায় তালিকার সংখ্যা আছে ৪ হাজার ৩শত ২১টি তার মধ্যে আমি প্রথম কথায় ঘর দিয়েছি ৬১২টি পরিবারকে। এরপরের ফেজে ঘর দিয়েছি ৮০৪টি পরিবারকে। আর এইটি হচ্ছে ৩য় ফেজে আমার এই জেলায় ঘর হচ্ছে ১২৬৭ টি। ১২৬৭ ঘর এখন একযোগে এই জেলার ৯টি উপজেলাতে আমাদের চলমান রয়েছে।
পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জি.এম হিরা বাচ্চু বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, এই বাংলাদেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না, ভুমিহীন থাকবে না। আমি বলতে চাই, এটা একটা দুরসাহসিক ঘোষণা, যে ঘোষণা পৃথিবীর কোন রাষ্ট্র নায়ক দিয়েছেন কী না আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা যার রক্ত এই শরীরে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গবন্ধু কন্যা তিনি তার পক্ষেই সম্ভব এমন একটি দুর সাহসিক ঘোষণা দেওয়া। বঙ্গবন্ধু কন্যার পক্ষেই সম্ভব এটা বাস্তবায়ন করা।
তিনি কথা বলেই শেষ ক্ষান্ত থাকেন না। উনি যে কথার সাথে কাজের মিল রাখেন তা বিভিন্ন সময়ে প্রমাণ হয়েছে। উনি প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশের কোন মানুষ ভূমিহীণ থাকবে না। গৃহহীন থাকবে না। আজকে যে আশ্রণায়ন প্রকল্পের মাধ্যেমে যে ঘর গুলো অশহায় মানুষের কাছে উনি হস্তান্তর করছেন ও দিয়েছেন। উনি প্রমাণ করেছেন তিনি শুধু ঘর দিয়ে নয় আজকে দেখি কৃষি সেক্টর, মৎস সেক্টর, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ প্রত্যেকটি বিভাগে আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একক হস্তক্ষেপে, একক নেতৃত্বে বাংলাদেশ কে একটি অনউন্নত জাইগা থেকে উন্নত জাইগায় উপস্থাপন করেছেন।
সে জন্য বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করতে চাই। আমি আপনাদের উদ্যেশে এইটুকু বলতে চাই আপনাদের মাথার উপরে যে মানুষটি একটি হাত তুলে দিয়েছে তার জন্য দোয়া করা আমদের ফরজ হয়ে দাঁড়াই।
Comments are closed.