বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জোসনা সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আশফাক আহমেদ গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে পুলিশের হেডকোয়ার্টার্সে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রের ট্র্যাকিং নম্বর: ১৭৩৮২১৮০৬০০০০৯।
তবে অভিযুক্ত জোসনা সরকার উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ছিলেন কথাস্বীকার করলেও, তার বিরুদ্ধে আনিতো সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জোসনা সরকার স্থানীয় রেজাউল করিম (গ্রাম: পাকা, বাগাতিপাড়া) এর সঙ্গে মিলে ভারতের পলাতক কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাগাতীপাড়ার মাকুপাড়া এলাকায় ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের একটি শাখায় নিয়মিত বৈঠকের অভিযোগও করা হয়েছে।
অভিযোগকারী দাবি করেন, জোসনা সরকারের ছেলে কাওসার জামান রাজধানী ঢাকায় বসে ওই অর্থ ব্যবহার করে সরকারবিরোধী কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। এমনকি তিনি নিজেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়।
এছাড়া আশফাক আহমেদ অভিযোগ করেন, তিনি এসব কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করায় তাকে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং তার পরিবার বর্তমানে জীবননাশের হুমকির মুখে রয়েছে। কাওসার জামান নাকি প্রকাশ্যে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। অভিযোগপত্রে হুমকির প্রমাণ সংযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অতীতে জোসনা সরকার বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা উসকে দিয়েছেন এবং তার ছেলে এখনও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত রয়েছেন। রেজাউল করিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধেও আগেও একাধিক অভিযোগ দেওয়া হলেও স্থানীয় থানা থেকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাকুপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “কাওসার জামান কখনো শিবির বা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এমনকি সংগঠনের একজন কর্মী হওয়ার মতো যোগ্যতাও তার নেই। তার পরিবার বরং দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।”
অভিযুক্ত কাওসার জামান অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি নিজেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের একজন প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবি করলেও তার কোনো লিখিত বা প্রামাণ্য দলিল উপস্থাপন করতে পারেননি। উল্টো তার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “আমরা অভিযোগটি পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স থেকে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল, প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপের পাশাপাশি,আশফাকের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।