বাগেরহাটে প্রথম করোনা আক্রান্ত, ১৬ বাড়ি লকডাউন ঘোষনা

0 ২৬১

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটে ফরিদপুর থেকে আসা ব্যক্তি প্রথম করোনা আক্রান্ত, ১৬ বাড়ি লকডাউন আতঙ্কে এলাকাবাসী।
বাগেরহাটের চিতলমারীতে একজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সনাক্ত হয়। বুধবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর থেকে বাগেরহাটের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এই তথ্য আসার পর সনাক্ত হওয়া ওই বাড়িসহ পাশের ১৬ বাড়ি লকড ডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ওই বাড়ির সবার নমুনা সংগ্রহ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।বাগেরহাটে এই প্রথম কোন করোনা ভাইরাসের রোগী সনাক্ত হলো।এদিকে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকাসহ অন্য জেলা থেকে চিতলমারীসহ বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় আসা ৭৮৫ জনকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। তাঁদের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, বাগেরহাটের চিতলমারীর এক ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সনাক্ত হয়েছে। এই আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি জেলার বাইরে ফরিদপুর থেকে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোট ৫৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। এটি জেলার প্রথম কোন করোনা রোগী সনাক্ত হল। খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর থেকে তথ্য আসার পর বুধবার বিকেলে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় এবং স্বাস্থ্য বিভাগের একটি মেডিকেল টিমকে সাথে নিয়ে ওই রোগীর বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে নতুন করে ওই রোগীর আবারও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। আক্রান্তের শরীরে করোনা ভাইরাসের যেসব উপসর্গ থাকার কথা তা কিন্তু এখন নেই। তিনি এখনো আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিক আছেন। তাকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হবে। করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের খবরে আতংকিত না হয়ে জেলাবাসীকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম বলেন, আক্রান্ত ব্যাক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়নের পাতরাইল জামে মসজিদের মোয়াজ্জিম ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল তিনি ফরিদপুরের পাতরাইল থেকে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামে আসেন। খুঁসখুঁসে কাশিসহ করোনা আক্রান্তের উপসর্গ থাকায় তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে নমুনা পরিক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আইইডিসিআরের রির্পোটে তার শরীরে করোনা পজেটিভ এসেছে। এই মোয়াজ্জিম বাগেরহাট জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। তার বয়স ৩৫ বছর। জেলার বাইরে থেকে আসায় গত ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য বিভাগ তার বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের যেসব উপসর্গ থাকার কথা তার শরীরে তা ছিল না। তারপরেও যেহেতু তিনি বাগেরহাটের বাইরে থেকে এসেছেন তাই করোনা সন্দেহে তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআরে পাঠায় মেডিকেল টিম। বুধবার দুপুরে পিসিআর থেকে আসা রিপোর্টে তার শরীরে করোনা পজেটিভ সনাক্ত হওয়ায় ওই বাড়িসহ পাশের ১৬ বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে। ওই বাড়িসহ পাশের তিনটি বাড়ির সবাইকে ঘর থেকে না বেরোনোর জন্যও বলা হয়েছে।

আক্রান্ত রোগীকে তার বাড়িতে রেখে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুন হাসান মিলনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা নিজেই নিশ্চিত করেছেন। গ্রামের পথে পথে ব্যারিকেড

অপরদিকে, বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার খবরে উপজেলা জুড়ে করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। উৎকণ্ঠিত এলাকাবাসী গাছেরগুড়ি ও বাঁশ দিয়ে ওই গ্রামে যাতায়াতের কুরমনি পালবাড়ি ও ঋষিপাড়া সড়কসহ পথে পথে ব্যারিকেড দিয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.