বিএনপি সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা করেছে, নির্যাতন করেনি: ভারতকে ফখরুল

0 ২৫৩

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম: বিএনপির আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর কোনও নির্যাতন হয়নি দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ভারতের সংসদে বলা হয়েছে- বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা জোর গলায় বলতে পারি, বিএনপির আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরে স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে, নির্যাতন হয়নি। সংখ্যালঘুর ওপর আওয়ামী লীগের আমলে যত নিপীড়ন হয়েছে, তা আর কখনও হয়নি।’

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনির্ধারিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে পূর্বঘোষিত বিএনপির র‌্যালিতে পুলিশ অনুমতি না দেয়ায় তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে করেন মির্জা ফখরুল।

এদিকে সকাল থেকে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মোতায়েন করা হয়। এসময় বিএনপির কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের হতে বারবার নিষেধ করতে দেখা যায় পুলিশকে।

ভারতের নাগরিকত্ব আইন এনআরসি’র প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের (ভারত) সংসদে খুব পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। এটা নাকি বিএনপির আমলে হয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব বিলে বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থানরত সকল অমুসলিম অধিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। কিন্তু মুসলিমরা আবেদনের কোনও সুযোগ পাবে না। মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে না।’ ব্রেকিংনিউজ

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আমাদের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটা র‌্যালি হওয়ার কথা ছিল। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নেতাকর্মীরা কার্যালয় থেকে নিচে নামলে তারা ব্যবস্থা নেবে। আমরা র‌্যালিটি করতে পারলাম না।’

বিএনপি এই মুহূর্তে কোনও সংঘাতে যেতে চায় না উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন,  ‘আমরা আমাদের অধিকারগুলো নিয়ে কথা বলছি। এখন সভা-সমাবেশ করতেও অনুমতি নিতে হয়। এমনকি সাংগঠনিক কার্যক্রমেও অনুমতি লাগে।’

ফখরুল বলেন, ‘দলীয় রাজনীতি ঊর্ধ্বে সারা বিশ্বে স্বীকৃত মানবাধিকার। সেই মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য আজকে র‌্যালি করার কথা ছিল। আমাদের দেশে একটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আছে। যার বয়স ১০ বছর, এই সময়ে তারা একটি মামলার তদন্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশে এখন প্রতি মুহূর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আইন ও সালিশকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ১ হাজার ৫৯৯ জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের হত্যার নাম দেয়া হয়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। বিএনপির হিসাবে, এ ধরনের হত্যা ২ হাজারও বেশি সংঘটিত হয়েছে। ১ লাখের ওপর বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর নামে মামালা দেয়া হয়েছে। আজকে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে যে ব্যক্তি ভিন্ন মত পোষণ করে তাকে হয় গ্রেফতার করা হয়, না হয় গুম করা হয়। এরইমধ্যে অনেক নেতা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক গুম হয়েছে।’

পাকিস্তান আমলের চেয়েও গত ১০ বছরে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জাতিসংঘ থেকে বারবার বাংলাদেশকে ডাকা হয়েছে। ৪ বছর আগে মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ যে অঙ্গীকার করেছিল, তা রক্ষা করেনি। এজন্য গতবার সরকারের প্রতিনিধিদের তিরস্কার করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গার্মেন্ট শ্রমিক, বিদেশে নারী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, কিন্তু সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.