রাজশাহীতে শুরু হয়েছে অঘোষিত ‘লকডাউন’

0 ২৪৭

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম:  রাজশাহীতে শুরু হয়েছে অঘোষিত ‘লকডাউন’। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাজশাহীতে প্রবেশ করতে বা বের হতে দেয়া হচ্ছে না। সোমবার দুপুর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এমন কঠোর অবস্থান নিয়ে কাজ শুরু করেছে। । এছাড়াও দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে যে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে জরুরি সেবা বাদে রিকশা ও মোটর সাইকেলসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভা হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নিয়েে এ জরুরী সভার আয়োজন করা হয়। লোকজন যে অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে বের না হয় এবং রাজশাহীতে প্রবেশ ও বের হতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়টি বাস্তবায়নে আইনশৃংখলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সভায়।

সভায় সভাপত্বি করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ূন কবির। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সদর আসনের সংসদ সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এসএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী বিভাগয়ি পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জনাব জামিলুর রহমান, রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা: মহা: এনামুল হকসহ সকল বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে বের হয়ে সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা সাংবাদিকদের জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন সর্বোত্তম পন্থা; তা প্রমান হয়েছে। আমরাও সেদিকে যেতে চাই। আজ থেকে রাজশাহীতে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না বা বের হতে পারবে না। খাবার ও ওষধের যানবাহন ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলবে না বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, গত মার্চ মাসে রাজশাহীতে বিদেশ থেকে এসেছে দুই হাজার ৯৫৯ জন। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত রাজশাহীতে হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয় এক হাজার ১০৫ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২৯৪ জন। আর ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৮১১ জনকে। গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী নগরে হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয় সাতজনকে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। পরীক্ষার আওতা বাড়ার পর দেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে; একদিনে নতুন ৩৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, তাতে দেশ

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এর আগে এক অনুষ্ঠানে নতুন করে চারজনের মৃত্যুর তথ্য দিলেও পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সেই তথ্য সংশোধন করে দেন। নতুন রোগীর এই সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় দ্বিগুণ। এক মাস আগে দেশে প্রথমবারের মত কারো দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এক দিনে মৃত্যু ও আক্রান্তের এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে মোট ৩৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এ ছুটি ক্রমান্বয়ে ১১ এরপর ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২০৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত মরণঘাতী এ ভাইরাসে ১১ লাখ ১৮ হাজার মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছেন গেছেন ৬৯ হাজার ৪৫৮ জন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৮৬ জন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.