রাজশাহী নগরীকে সবুজে আচ্ছাদিত করতে রাসিকের নানা উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর রাস্তায় রাস্তায় সাজানো সবুজের সারি, বিশাল বৃক্ষের ছায়া, আর পরিচ্ছন্ন পরিবেশ যেন এক আধুনিক বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীক। জীবের অস্তিত্ব রক্ষা, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের ব্যাপক বৃক্ষরোপণ করতে হবে। নগরীর সৌন্দর্য্য রক্ষায় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহে বিভিন্ন প্রজাতির শোভাবর্ধক গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। বৃক্ষরোপণের সাথে সাথে এগুলোর পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বৃক্ষ পরিচর্যাকারীগণ। নগরীকে নান্দনিক শোভায় আচ্ছাদিত করতে নতুন সকল সড়কের আইল্যান্ড, রোড ডিভাইডার, সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রিত পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র, তালাইমারী থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীর পাড় ঘেষে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল ও ঔষধি জাতের বৃক্ষরোপণ করা হয়।
পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, বৃক্ষরোপণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ নগরী ইতোমধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। ব্যাপক বৃক্ষরোপণের ফলে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল পাখির সমারোহে এ নগরীর সৌন্দর্য্য আরও বৃদ্ধি পাবে। সবুজ পরিবেশ বান্ধব নগরীর আরও বসবাসের উপযোগী হয়ে গড়ে উঠবে। পরিবেশের উন্নয়নে নগরীতে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে রেডক্রিসেন্ট সহযোগিতা প্রদান করছে এজন্য রেডক্রিসেন্টকে ধন্যবাদ জানান তিনি। আসুন সকলে মিলে এ নগরীকে বসবাসযোগ্য নগরী রূপে গড়ে তুলি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্টের সহযোগিতায় নগরীতে ফুল ফল ও ঔষধি প্রজাতির প্রায় এক হাজার বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও রাজশাহী মহানগরীতে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও রাসিক প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহম্মদ হুমায়ূন কবীর। গত বছর প্রায় ৫০ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। চলতি বছর জুন থেকে নভেম্বর পযর্ন্ত প্রায় ২৯ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এমনও অনেক ফুল রয়েছে যার সুগন্ধি নগরবাসীকে মোহিত করে। রাস্তা কিংবা ডিভাইডারের ফুল এখন আর নগরবাসী ছিড়ে না। তারা এগুলো উপভোগ করতে ভালোবাসে।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড.এবিএম শরীফ উদ্দিন জানান, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের অধীনে সবুজায়ন ও নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। নগরীর সৌন্দর্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বৃক্ষরোপণ, রাস্তার দুই পাশ ও রোড ডিভাইডারের সবুজায়ন, বাগান তৈরি, এবং নদীর তীরের সৌন্দর্যবর্ধনের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে শহরকে পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর করে তুলেছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মহানগরীর প্রধান প্রধান সকল সড়ক বিভাজকগুলোর সবুজায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে নগরীর পরিবেশকে আরও উন্নত ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এক একটি সড়কে এক এক প্রজাতির এবং ডিজাইনের মাধ্যমে শহরের সৌন্দর্যের নান্দনিকতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এছাড়া রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কিছু সংখ্যক সংরক্ষিত পুকুরগুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে কাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন পুকুর সংরক্ষণ ও পরিচর্যার মাধ্যমে এগুলোকে কেবল জলাধার হিসেবে নয়, একটি সৌন্দর্যমণ্ডিত ও পরিবেশবান্ধব স্থান হিসেবেও গড়ে তোলা হয়েছে। পদ্মা আবাসিকের পারিজাত লেক, সপুরা মঠ পুকুর, পদ্ম পুকুর, টিবিপুকুর এগুলির অন্যতম। প্রতিটি পুকুরের পাড়ে সবুজ ঘাস, ছায়াদার গাছ, এবং মাঝে মাঝে বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব পুকুরের স্বচ্ছ জল আর পাড়ের সুশোভিত সবুজায়ন নগরবাসীর জন্য শান্তি ও নির্মলতার স্থান তৈরি করেছে। রাত্রে আলোকসজ্জা দিয়ে সাজানো পুকুরগুলো আরও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা রাজশাহীর অন্যতম পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। এই সবুজায়ন ও পুকুর সংরক্ষণের উদ্যোগগুলো রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পরিবেশবান্ধব শহর নির্মাণের প্রচেষ্টাকে সফলভাবে ফুটিয়ে তুলছে।