শিবগঞ্জে পাষন্ড স্বামীর বটির কোপে স্ত্রী নিহত, ঘাতক স্বামী পুলিশের হাতে আটক

৯১

ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর বিশ্বাসপাড়া এলাকায় রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর বটির উপর্যুপরি কোপে স্ত্রী খুন হয়েছেন।

ঘটনার পর নিহতের ঘাতক স্বামী পালিয়ে গেলেও পরের দিন ভোরে পুলিশের নিকট ধরা দেশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি বটি উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ সয্যা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী মনিরুল ইসলাম (৪২) স্ত্রী রুনা বেগম (৩৫)কে হত্যা করে হাতের বটি নিয়ে আশপাশের লোকজনকে ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পরের দিন সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে শিবগঞ্জ থানা ও ডিবি পুলিশের নিকট ইউপি সদস্য রাজ্জাক মেম্বার ও স্থানীয়দের নিয়ে আত্মসমর্পণ করে মনিরুল ।

পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনিরুল ইসলাম রাজমিস্ত্রীর কাজের সুবাদে ১৮ বছর আগে বি-বাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ভোলাচং-কোনাঘাটা এলাকার মৃত শহিদ মিয়ার মেয়ে রিনাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর দীর্ঘদিন ওই এলাকায় বসবাস করাকালীন সময় মনিকা খাতুন (১৬), মনিফা খাতুন (১৪) ও ময়না খাতুন (১০) নামে ৩ কন্যার জন্ম দেন মনিরুল। তিন বছর আগে ৩ কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিজ বাড়িতে চলে আসে এবং বসবাস শুরু করে।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়।

এসময় স্বামী মনিরুল ইসলাম ঘরে থাকা একটি ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে স্ত্রী রিনাকে। স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে বটির ভয় দেখিয়ে বাড়ির দেয়াল টপকে দৌড়ে পালিয়ে যায় স্বামী মনিরুল। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে ভাতিজি নুরজাহান, ভাতিজা জামাই ডলার ও বড় মেয়ে মনিকা স্থানীয়দের সহায়তায় রিনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ সয্যা হাসপাতালে নেয়। তবে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে নেয়ার পথে গোদাগাড়ীতে রিনার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় প্রতিবেশী ও মনিরুলের ভাতিজা কাফি মিয়া জানান, রিনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে গেলে নিহতের স্বামী মনিরুল বটির ভয় দেখিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। নিহতের স্বামী মনিরুল ইসলাম কিছুটা মানুষিক ভারসাম্যহীন বলেও জানান তিনি। এর আগেও একবার রিনার গলায় ছুড়ির আঘাত করেছিলো ঘাতক মনিরুল। মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে সেবার কোনো মামলা করেনি রিনা বেগম।

নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রাজ্জাক মেম্বার বলেন, রোববার বিকালে মনিরুল তার স্ত্রী রিনাকে বটি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে গেলে তাকে প্রথমে ২৫০ সয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পথে মারা যায়। ও সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মনিরুল ইসলাম নিজে হত্যার দায় স্বীকার করে আমি সহ স্থানীয়দের সামনে পুলিশের হাতে ধরা দেয়।

Comments are closed.