‘সাকিব একবারে বিরতি নিক, কেউ আটকাবে না’

২১৪
সাকিব আল হাসান। ছবি : সংগৃহীত

গেল কয়েক মাস ধরেই প্রতি সিরিজের আগে আলোচনায় থাকেন সাকিব আল হাসান। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে আলোচনায় ঘুরেফিরে সাকিব। অবশ্য আলোচনার জন্মদেন সাকিব নিজেই। দল ঘোষণার পর হঠাৎ করে জানালেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি। এই জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অবস্থায় নেই।

সাকিবের এমন মন্তব্যের পর চটেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন বোর্ড প্রধান। এবার বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনও জানালেন তাঁর মতামত। তাঁর মতে, সাকিব না খেলতে চাইলে সরাসরি জানিয়ে দিক। একবারে বিরতি নিয়ে নিক। সাকিবের এই খাম-খেয়ালি আর চলতে দেওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন সুজন।

আজ মঙ্গলবার মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে খালেদ মাহমুদ বলেছেন, ‘এখন ফুলস্টপের সময় চলে এসেছে। যথেষ্ট হয়েছে। আপনি বিসিবিকে চালাতে পারেন না। চাইলেই কেউ বলতে পারে না যে আমি খেলব কিংবা খেলব না। কেউ যদি খেলতেই চায় তাহলে ঠিকমতো খেলতে হবে। যদি খেলতে না চায় তাহলে বলে দিতে হবে। যদি বিরতি চায়, তাহলে একবারে বিরতি নিক। কেউ তাকে আটকাবে না। প্রেসিডেন্টও বলতে চেয়েছিলেন এভাবে। হয়তো বা তিনি একটু আস্তে বলেছেন। আমি একটু জোরে।’

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় সাকিব যাবেন কি না—এই নিয়ে ভাবতে তাঁকে আরো দুদিন সময় দিয়েছে বিসিবি। এরপরই সাকিবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি।

এ ব্যপারে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই তার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিসিবি নেবে। বিসিবির প্রোডাক্ট ওরা। বিসিবি ওদের প্রোডাক্ট না। বিসিবি কোনো ব্যক্তির জন্য না। বিসিবির জন্যই ওরা। নিশ্চিতভাবেই ওরা বাংলাদেশ ক্রিকেটের মূল স্টেকহোল্ডার। কিন্তু এই স্টেকহোল্ডারের জন্য তো বিসিবির অনেক বিনিয়োগ ছিল। তাদেরকে তৈরি করে তোলা হয়েছে। তাদের পেছনে তো বিসিবি অনেক খরচ করেছে সেই সময়।  বিসিবি তো তাদের অভিভাবক। আমাদের সবার অভিভাবক বিসিবি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ওপর আমরা কেউ না, তারাও না।’

এর আগে গত রোববার সাকিব আল হাসান বিমানবন্দরে বলেন, ‘সদ্যসমাপ্ত আফগানিস্তান সিরিজ আমার কাছে হতাশাজনক। আমার যে চাওয়া ছিল, সে অনুযায়ী ভালো পারফর্ম করতে পারিনি। আর দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নিয়ে বলতে হয়, আমি মানসিক এবং শারীরিক যে অবস্থানে আছি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলাটা খুব একটা সম্ভব নয়। যদি একটা বিরতি পাই, আগ্রহটা ফিরে পাই, তাহলে আমার জন্য খেলাটা সহজ হবে। আমার জন্য ভালো হয়।’

বাংলাদেশি তারকা আরো বলেন, ‘আমি আফগানিস্তান সিরিজ এনজয় করতে পারিনি। আমি চেষ্টা করেছি, কিন্তু হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে, সিরিজে আমি শুধুই ‘প্যাসেঞ্জার’ ছিলাম। এই অবস্থায় আমি একদমই থাকতে চাই না। এই অবস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলাটা ঠিক হবে না আমার জন্য।’

অবশ্য সাকিবের মন্তব্য নিয়ে মোটেই বিচলিত নন বোর্ডপ্রধান নাজমুল হাসান পাপন। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা মোটেও বিচলিত নই। ও হয়তো মানসিক, শারীরিকভাবে ডিস্টার্বড। ওর যদি সমস্যা হয় আমাদের জানাতে পারে। বিমানবন্দরে বলে না দিয়ে সে তো দিনের বেলায় আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত। কোচের সঙ্গে কথা বলতে পারত। সুজনের সঙ্গে কথা বলতে পারত। হঠাৎ করে এভাবে চমক দেওয়া, কেন করছে—অনেকে এটা পছন্দ করেনি।’

তবে কিছুটা রাগের সূচে নাজমুল হাসান বলেন, ‘সাকিব বলছে আফগান সিরিজে সে উপভোগই করেনি। আমরা যে জিতেছি সে উপভোগই করেনি। কেন? তার যদি অফ ফর্ম থাকত, সে বলত, খেলব না! সমস্যাটা কোথায়? খেলার পর যদি বলে উপভোগ করেনি, আগ্রহ নেই, মোটিভেশন নাই, তাহলে আমাদের বলো যে, আগ্রহ নেই। তাহলে খেলো না।’

Comments are closed.