সেই দীঘি এখন……

0 ২,২২৩

আলমগীর,বিনোদন :
সেই যে একটি ছোট্ট মেয়ে ফোনে তার বাবাকে আদুরে গলায় বলছিল- ‘বাবা জানো আমাদের সেই ময়না পাখিটা না আজ আমার নাম ধরে ডেকেছে।’

এরপর তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া সেই শিশু দীঘিকে নিয়ে চলচ্চিত্রে কাড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছিল। ছোট্ট শিশুটি তাদেরও হতাশ করেনি। কয়েক বছরে অভিনয় করে ফেলে প্রায় তিন ডজন ছবিতে। তার ছোট্ট মাথায় পরপর তিনবার ওঠে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মুকুট।

এরপর মিডিয়া থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া প্রার্থনা ফারদিন দীঘিকে সম্প্রতি দেখা গেছে জাতীয প্রেসক্লাবে। সেই শিশুশিল্পীটি এখন কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যের পথে। পড়ছে নবম শ্রেণিতে।

‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ দীঘি চলচ্চিত্র, নাটক কিংবা বিজ্ঞাপনে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত বটে, তবে জানা গেছে পুরোপুরি নায়িকা সেজে চলচ্চিত্রে ফিরছে ২০১৯ কিংবা ২০২০ সালে।

২০১১ সাল থেকে আড়ালে থাকা দীঘি গত শুক্রবার হঠাৎ হাজির হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে। তখন সেখানে চলছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) নির্বাচন। তাকে চিনতে অনেকের সময় লাগে। তারপর তাকে ঘিরে সেলফি উৎসবে মেতে ওঠেন অনেকে।

কেমন দেখা গেছে সেদিন দীঘিকে- ছোট্ট সেই দীঘি আর ছোট্টটি নেই। সে অনেকটাই পরিণত। বব কাটিং চুল আর লাল রঙের পোশাকে বেশ মোহনীয় লাগছিল কৈশোর পেরোতে থাকা দীঘিকে। ঠোঁটে ছিল মায়াবী হাসি।

স্ট্যামফোর্ডের নবম শ্রেণির ছাত্রী দীঘি আপাতত পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত। অন্তত এসএসসি পরীক্ষার আগে অভিনয় থেকে দূরে থাকবে সে। দীঘির বাবা অভিনেতা সুব্রত অবশ্য আগেই জানিয়ে রেখেছেন, দীঘি আর শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করবে না। মূল চরিত্র অর্থাৎ নায়িকার ভূমিকা নিয়েই চলচ্চিত্রাভিনয়ে আসবে প্রয়াত অভিনেত্রী দোয়েলের মেয়ে দীঘি। সেটা ২০১৯ সালের পর। অর্থাৎ তার এসএসসি পরীক্ষার পর।

প্রসঙ্গত বলা যায, দীঘির মা দোয়েল তার সময়ে চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেত্রী ছিলেন। সে সময় বাবা সুব্রতও চলচ্চিত্রে অভিনয়ে বেশ করে প্রশংসা কুড়ান।

দীঘি মডেলিং ও অভিনয় থেকে দূরে সরে থাকলেও নানা সময়ে বিভিন্ন নির্মাতার কাজের অফার নিয়ে তাদের বাড়িতে। পড়াশোনার ব্যস্ততা তো আছেই, পাশাপাশি শিশুশিল্পীর ইমেজ কাটাতে দীঘি ও তার বাবা সুব্রত অনঢ়। এরই মধ্যে অনেকগুলো ছবি, বিজ্ঞাপনচিত্র ও নাটকের অফার ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপনে জনপ্রিয়তা পাওয়া শিশু দীঘির চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ছবির মাধ্যমে। পাঁচ-ছয় বছরে ৩৬টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছে সে। এর মধ্যে মুক্তি পায় ৩৪টি ছবি, যার অধিকাংশ ব্যবসা সফল।

প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই ২০০৬ সালে ‘শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী’হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে দীঘি। এরপর ২০১০ সালে ‘চাচ্চু আমার চাচ্চু’এবং ২০১২ সালে ‘এক টাকার বউ’ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। শিশুশিল্পী হিসেবে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নজির।

Leave A Reply

Your email address will not be published.