হাঙ্গেরিকে টিকা দিচ্ছে বাংলাদেশ, দিতে পারে বলিভিয়াকেও

0 ২৯৬

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশ হাঙ্গেরি বাংলাদেশের কাছে করোনা ভাইরাসের ৫ হাজার টিকা চেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার হাঙ্গেরিকে সেই টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একইসঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়াও বাংলাদেশের কাছে কিছু করোনার টিকা চেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

রবিবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এসব কথা জানিয়েছেন।

সংসদে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গেল সপ্তাহে চিঠি এসেছিল। হাঙ্গেরি ৫ হাজার টিকা চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী সদয় সম্মতি দিয়েছেন। আমরা হাঙ্গেরির ভাই-বন্ধুদের জন্য আমাদের স্টক থেকে এ টিকা পাঠিয়ে দেবো।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বলিভিয়াও চিঠি দিয়েছে ভ্যাকসিন চেয়ে। প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলে আমরা পাঠিয়ে দেবো।’

এক সময়ের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হাঙ্গেরি ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ১৯৭২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশে হাঙ্গেরির দূতাবাসও খোলা হয়েছিল। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার নানামুখি দ্বারও উন্মোচিত হচ্ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে হাঙ্গেরিতেও সমাজতন্ত্রের অবসান ঘটে।

গেল ৫ নভেম্বর ‘কোভিশিল্ড’ নামের ওই টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে ভারতের টিকা উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। গত ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এ টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় চুক্তির ধারা অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ৬ মাসে বাংলাদেশকে ৩ কোটি টিকা দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিমাসে টিকা আসবে ৫০ লাখ করে। বাংলাদেশ সরকার জনগণকে বিনামূল্যে এ টিকা দেয়ার ঘোষণা আরও আগেই দিয়ে রেখেছে।

গত ২১ জানুয়ারি উপহার হিসেবে ভারতের পাঠানো করোনা ভাইরাসের ২০ লাখ ডোজ টিকা দেশে পৌঁছে। এর ৪ দিন পর গত সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভারতের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিশেষ ফ্লাইটে এসেছে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি আরও ৫০ লাখ টিকা। টিকাটির নাম দেয়া হয়েছে ‘কোভিশিল্ড’।

গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বহুল প্রতীক্ষিত টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং প্রথম ৫ জনকে টিকা দেয়া দেখেন। সব মিলিয়ে উদ্বোধনী দিনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়।

পরদিন ২৮ জানুয়ারি ঢাকার ৫টি হাসপাতালে একদিনে ৫৪১ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হয়। ওইদিন সকাল ৯টা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৪টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৪টি, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি, কুর্মিটোলনা জেনারেল হাসপাতালে ৪টি ও কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে একটি বুথে করোনার টিকা দেয়া হয়।

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.