জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ ঘুরে দাড়িয়েছে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রোজিনা সুলতানা রোজি, বাগমারা-রাজশাহী : সারা দেশের মানুষ আজ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র সেটা আপনারা বিশ্লেষন বরেছেন। ইসলাম শান্তির ধর্ম। সেই ধর্মকে তারা কোথায় নিয়ে গেছে। আমরা দেখেছি ৭১ এর পর ৭৫ পর্যন্ত তারা ঘাপটি মেরে ছিল। তারাই বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে। আল্লাহ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কে বাঁচিয়ে রেখেছেন। শনিবার বিকেলে রাজশাহীর বাগমারায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জাম্না খান কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, আজ বিশ্ববাসী দেখছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার জন্য নিরলস কাজ করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে আপনারাও ভাল ভাবে সাড়া দিয়েছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ দিয়ে খাটো করবোনা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আপনারা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। দেশের মানুষ আজ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গুলশান হামলায় সাত জঙ্গি মারা যায়। বিভিন্ন সময়ের জঙ্গি হামলার ঘটনার উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখি ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন নামে সংগঠিত হয়ে এসব করে। এদের দয়ামায়া নাই। যে কোন নৃশংস কাজ এরা করতে পারে। ‘ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে দেশবাসী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তুলেছেন। ৬৪ জেলা প্রশাসক, জনপ্রতিনিনিধি, শিক্ষক, ছাত্র জনতা সবার সাথে তিনি আলাপ করেছেন। এদেশের মানুষ জঙ্গিবাদ পছন্দ করেনা। কাজেই আপনারা সহযোগীতা করেন।
মন্ত্রী বলেন, বাগমারার মানুষ সন্ত্রাস করে না। বাইরে থেকে এসে সন্ত্রাস করে যায় সেটা এখানে এসে জানলাম। কেন এই জঙ্গি কেন এই সন্ত্রাস। আমরা জানি বিএনপি জোট জঙ্গিবাদের মাধ্যমে দেশ কে অস্থিতিশিল করতে চায। এর আগে তারা পেট্রোল সন্ত্রাস করেছে। অগ্নিসন্ত্রাসের পর তারা টার্গেট কিলিং শুরু করলো। জীবন বাজি রেখে সমান্তরাল ভাবে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনছার এবং অন্যান্য বাহিনীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার জন বান্ধব সরকার। এই সরকার সব সময়ই দেশের জনগেনর কথা ভাবেন এবং বলেন। দেশের জনগনের শান্তি রক্ষা করতে বর্তমান সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। গুটি কয়েক খারাপ লোকদের কারনে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে তা কোন ভাবেই সরকার মেনে নিবেনা। ওই সকল দুকৃতকারীদের শক্তহাতে দমন করতে আইন শৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। ২০০৪ সালে বাগমারায় বাংলা ভাইয়ের শাসনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সময় চার দলীয় জোট বিএনপি’র সরকারই দেশের জঙ্গিবাদের মূল যন্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। যার কারণেই সারা দেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছিল। বর্তমান সরকার ওই সকল জঙ্গিদের শক্তহাতে দমন করছেন। আজ নারায়নগঞ্জে পাইকপাড়াতে জঙ্গি আস্তানায় আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা হানা দিলে তাদের বন্ধুক যুদ্ধ শুরু হয়। বন্দুক যুদ্ধে গুলশান হলি আর্টিজাম রেস্তোরার মুল পরিকল্পকারী তামিম চৌধুরীসহ তিন জঙ্গি নিহত হয়েছেন। সেখান থেকে বেশ কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করেছে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বদ্ধ পরিকর। গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরীর চ্যাপ্টার আজ শেষ হয়েছে এবং অচিরেই মেজর জিয়ার চ্যাপ্টারও শেষ হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জি: এনামুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী জেলার মহিলা সংসদ সদস্য আক্তারহাজান এমপি, পবা-মোহনপুরের সাবেক সংসদ সদস্য মেরাজ উদ্দীন, রাজশাহী জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব এ্যাড, জাকিরুল ইসলাম সান্টু, রাজশাহী জর্জকোর্টের সাবেক পিপি এ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন, রাজশাহী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিরেন্দ্রনাথ সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সারোয়ার আবুল। অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংসদ এনামুল হক বাগমারা উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন।
পরে মন্ত্রী বাগমারা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং হাটগাঙ্গোপাড়া ও ভাগনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন।