শেষ মুহুতে দেবী দুর্গাকে রং তুলিতে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত রাজশাহীর কারিগররা

১০৬

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্টির মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু ধর্মীলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার মূল পর্ব। তাই শেষ মুহুতে রং তুলির আঁচরে প্রতিমার সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে তোলার জন্য দিন-রাত কাজ করে চলছে রাজশাহীর প্রতিমা শিল্পীরা। মন্ডপের সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছেন পূজা উদযাপন কমিটি। এদিকে পূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

এবার দেবী দূর্গার আগমন হবে গজে সেই সাথে আসবেন কার্তিক, গণেশ, লক্ষী আর স্বরসতী। দূর্গাপূজা সনাতন ধর্ম অবলম্বনীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হওয়ায় ব্যস্ততা একটু বেশি। তাই রাজশাহীর প্রতিমা শিল্পীরা শেষ মুহুতে দিন রাত কাজ করে চলেছে। তাবে কাজে সহযোগীতা করছেন শিল্পীদের বাড়ীর মহিলা সদস্যরাও।

ইতিমধ্যে মাটির কাজ শেষ করে রং তুলির আঁচর, শাড়ি কাপড় পড়ানো সহ আনুসাঙ্গীক কাজ করে প্রতিমার সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে তোলার শেষ কাজটি শুরু করেছেন। তবে এবারে জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় প্রতিমা তৈরির খরচও বেশি বলে জানান প্রতিমা শিল্পীরা।মন্ডপ মন্দিরেও চলছে শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতি।

এদিকে পূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এবার রাজশাহীর নগরীতে ৭৬টি মন্ডপে এবং ৯টি উপজেলায় ৩৭২টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্টিত হবে। দূর্গাপূজাকে ঘিরে ব্যাপক আয়োজন করলেও সরকারী নির্দেশনা মেনে যাকজমক ভাবে উদযাপিত হবে। এবার দেবী দূর্গার আগমন হবে গজে ও গমন হবে নৌকায় ফলে দেশের শান্তি শৃঙ্খলার উন্নতি হবে। ভরে উঠবে সুখ ও শান্তিতে এটাই প্রত্যাশা সকলের।

প্রতিমা শিল্পী গণেশ কুমার পাল বলেন, প্রতিবারের তুলনায় বছর জিনিস পত্রের দাম অনেক। সেই হিসেবে আমরা প্রতিমার মূল্য পাচ্ছি না। আমাদের রেট কম হয়ে যাচ্ছে। এখন সবাই এসে বলছে বাজেট আর বাড়ানো উপায় নাই। এই কারণে আমাদের এখন কম টাকার ভেতরে আমাদের কাজ করা লাগছে। আমাদের হাতে আর মাত্র একদিন সময় আছে তাই কাজের চাপের মুখে আমরা রং এবং শাড়ী কাপড় পড়ানোর কাজ খুব দ্রুত গতিতে করে ১ তারিখে আমাদের প্রতিমা সর্ম্পূর্ণ করে দিতে হবে।

কার্তিক চন্দ্র পাল বলেন, এখন আমাদের প্রতিমা গুলোতে সাজানো গোছানো ও রং করা চলছে। আমরা খুব ব্যস্ত আছি তবে এবার প্রতিমা গুলোর যে মূলা সে মূল্য গুলো আমরা পাচ্ছি না। এবং সব জিনিস পত্র বাইরে থেকে আনতে হয়। জিনিস পত্রের অনেক দাম। আমরা যে খাটনি করে কাজ করি সেই মূল্য আমরা পাই না। তব্ওু আমরা চাই মায়ের পূজোতে যেন আমরা সবাই আনন্দ করতে পারি।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ট্রাষ্টি, তপন কুমার সেন বলেন, এইবার জাতি সংঘ ঘোষিত ইউনিসকোর তালিকায় শারদীয় দূর্গা উৎসব কে তারা সৃস্কৃতি দিয়েছে। এটি বাঙালির একটি বিরাট অর্জন আমরা আশা করি এবারের দূর্গা পূজা খুব সুন্দর ভাবে উদযাপিত হবে। পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল প্রশাসন সহ আমার সবাই একযোগে কাজ করে যাচ্ছি।

রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার, এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, প্রতিমা তৈরির জায়গা গুলো আমরা ঘুরে দেখেছি, নিরাপত্তার ব্যবস্থা যাচাই করেছি। আমরা সেখানে দেখছি কারিগররা তারা নির্ভয়ে প্রতিমা বানাচ্ছেন, তারা কোন সমস্যায় পড়েননি। এটার ধারাবাহিকতায় আমাদের বিরাট একটা নিরাপত্তার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এবার প্রতিটি পূজা মন্ডপে আমাদের তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। গুরুত্ব অনুযায়ী এটা কখনো চার স্তরের করা হবে।

এবার আনসার এক্সটাটিক ফোর্স হিসেবে মন্ডপে অবস্থান করবে। আমরা মন্ডপের গুরুত্ব বুঝে আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে ওখানে এক্সটাটিক ফোর্স রাখবো। এর বাইরে আমাদের মোবাইল টিম থাকবে, হোন্ড মোবাইল থাকবে, সাদা পোশাকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের এলাকায় প্রতিটি মন্ডপে সনাতন সম্প্রদয়ের লোকজন উৎসব মুখর পরিবেশে তাদের এইবারের দূর্গা উৎসব উদযাপন করতে পারবে।

Comments are closed.