জুয়াড়ি ভারতের, ভারতীয় গণমাধ্যমেই সাকিবকে নিয়ে ‘মিথ্যাচার’!

         সাকিব আল হাসান। ফাইল ফটো

স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১৭ সালের নভেম্বরের দিকের ঘটনা। দীপক আগারওয়াল নামে এক ভারতীয় জুয়াড়ি সাকিব আল হাসানকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সাকিব তার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তবে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কাছে গোপন রাখায় দুই বছরের সব ধরনের ক্রিকেট থেকে গতকাল মঙ্গলবার সাকিবকে নিষিদ্ধ করে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। যদিও দোষ স্বীকার করায় শর্ত সাপেক্ষে সাকিবের এক বছরের শাস্তি স্থগিত করেছে আইসিসি।

অবাক করার মতো ঘটনা হলো- গতকাল সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই ভারতের গণমাধ্যমগুলো খুব আগ্রহ নিয়ে খবরটি প্রকাশ করছে। তবে ভারতীয় জুয়াড়ি যে সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দিয়েছিল সেটি ভারতের কোনও গণমাধ্যমেই উল্লেখ করা হচ্ছে না। উল্টো বলা হচ্ছে- সাকিব জুয়াড়িদের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তাকে সাজা দিয়েছে আইসিসি। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর এমন ‘মিথ্যাচারে’ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দেশের ক্রিকেটভক্তরা।

কলকাতা২৪ সাকিবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে খবরের শিরোনাম করেছে, ‘ক্রিকেট জুয়োতে জড়িয়ে দু বছরের জন্য নিষিদ্ধ সাকিব’।

এনডিটিভিও একই সুরে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে সাকিবকে জুয়াড়িদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার মিথ্যা বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই- যেন ক্রিকেট দুনিয়ার কাছে মনে হয়- সাকিব সত্যি সত্যি জুয়াড়িদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ও একই বছরের ২৭ আগস্ট আইসিসির দুর্নীতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আকসু) দুই দফায় জুয়াড়িদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুবারই সাকিব দীপক আগারওয়াল নামে ভারতীয় এক জুয়াড়ির নাম প্রকাশ করেন।

সাকিব আকসুকে জানান, তার এক পরিচিত আগারওয়ালকে তার নম্বর দিয়েছিলেন। এরপর জুয়াড়ি আগারওয়াল হোয়াটসঅ্যাপে সাকিবের সঙ্গে ম্যাসেজ চালাচালি করে ও সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সাকিব আগারওয়ালের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু বিষয়টি আইসিসিকে তাৎক্ষণাৎ না জানানোয় সাকিবকে শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে।

সাকিবের এই শাস্তিকে ক্রীড়াপ্রেমী ও খেলোয়াড়দের জন্য একটি ‘শিক্ষা’ উল্লেখ করে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা টুইটারে লিখেছেন- ‘সবার জন্য এটি একটি শিক্ষা। নিয়মকে তোয়াক্কা না করে খেলার চেয়েও বড় হতে চাইলে পতনের জন্য তৈরি থাকতে হবে। সাকিবের নিষেধাজ্ঞার ঘটনা সত্যি দুঃখজনক!’

অপর এক টুইটে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন লিখেছেন- ‘সাকিবের শাস্তি আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল। ওর জন্য সহানুভূতি নয়। কারণ সব নিয়ম জেনেও সে গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছে।’

আইসিসির শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আবারও ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

Comments (০)
Add Comment