রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোই মূল টার্গেট: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রয়োজন ছাড়া উৎসুক জনতা ভাসানচরে যেতে পারবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাদেরকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোই মূল টার্গেট।’

বুধবার (৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির প্রথম সভা’ শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আমাদের মূল আলোচনার বিষয়টি ছিল যে, আমাদের মূল কাজ হলো- যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেয়া। প্রত্যাবাসনের জন্য যা যা করণীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আমরা তা করে যাচ্ছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে চীন, জাপান ও জার্মানির সঙ্গে মিটিং করেছেন। তিনি আশাবাদী যাদের আইডেন্টিফাই করা হয়েছে, তাদের সরকার যাদের আইডেন্টিফাই করেছেন, তাদের হয়তো যাওয়া শুরু হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সভায় এটা জানিয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি টিম মিয়ানমার গিয়েছিল, যেখানে স্টেট কাউন্সিলর ও কয়েকজন জেনারেলের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। সেখানে অনেক সিদ্ধান্ত হয়েছিল, যৌথ কমিটি, বর্ডার কন্ট্রোল কমিটি হয়েছিল কিন্তু সেগুলো কোনো কাজে আসেনি।

তিনি বলেন, আমরা একটা সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলাম যে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর চতুর্দিকে আমরা কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করবো, যাতে মিয়ানমারের নাগরিকরা যারা এখানে অবস্থান করছেন তারা যাতে যত্রতত্র না যেতে পারেন, যাতে এক জায়গায় থাকতে পারে। তারাও যাতে অন্যরকম সিচুয়েশনে না পড়ে। এজন্য আমরা কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম।

শুধু কাঁটাতারের বেড়া নয়, চতুর্দিকে একটা ওয়াকওয়ে থাকবে, টাওয়ার থাকবে, সিসি ক্যামেরাও থাকবে। তাদের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা আমাদের সেনাবাহিনী সম্পন্ন করবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তায় নবগঠিত দুটি ইউনিট কাজ শুরু করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পুলিশ প্রয়োজনে বিজিবি ও র‌্যাবের সহযোগিতা নেবে। ক্যাম্পের বাইরে এখনকার মতো সেনাবাহিনীর অবস্থানও থাকবে।

ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা মাঝে মাঝেই মিয়ানমার গিয়ে ইয়াবা নিয়ে আসে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, লাভ-লোকসানের ভাগ নিয়ে প্রায়শই কলহ হয়। আমরা শুনেছি কলহের জের ধরে খুনাখুনি হচ্ছে, দু-চারটি খুনও হয়েছে। নতুন বাহিনীও তৈরি হয়েছে। এটা যাতে না বাড়ে সেজন্য টহল অব্যাহত থাকবে, রাতের টহল জোরদারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গারা নিজেরাই গিয়েছেন, কাউকে জোর করে নেয়া হয়নি। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা যেতে পারবেন। যারা যেতে চাইবেন তাদের নেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যে ফর্মুলা দিয়েছেন সেটা ফলো করে যত তাড়াতাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিগত দিনে অনেকবার (মিয়ানমার) গিয়েছেন, অনেক কথা হয়েছে, কিন্তু কোনোটাই কাজ হয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবারও আমাদের কনফার্ম করেছেন, তিনি বাইলেটারাল, ট্রাইলেটারাল, মাল্টিলেটারাল সবভাবে তিনি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আশাবাদী তারা (মিয়ানমার) খুব শিগগিরই রোহিঙ্গা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

Comments (০)
Add Comment