উইপোকায় খেলো ২৫ শিক্ষার্থীর মূল মার্কসিট

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তির সময় জমা দিতে হয় মূল এইচএসসি, এসএসসি মার্কশীট। এগুলো সংরক্ষণ করার দায়িত্ব থাকে বিভাগগুলোর। তবে সেগুলো সংরক্ষণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ। প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থীর মার্কসিট উইপোকায় খেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী তার মার্কসিট তুলতে গিয়ে দেখেন সবগুলো উইপোকায় খেয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। এক এক করে প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থীর গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রে এই অবস্থায় দেখতে পান।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডিপার্টমেন্ট আমাদের শিক্ষা জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস গুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত কর‍তে পারেনি। এটা অবশ্যই আনপ্রফেশনাল এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।
এবিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইত্তেহাদুল ইসলাম প্রণুত বলেন, ডকুমেন্টসগুলা উইপোকায় কেটেছে মূলত অফিসের স্টাফদেরই গাফিলতি ছিলো। তারা অযুহাত দিচ্ছে যে ৩ মাস ডিপার্টমেন্ট বন্ধ ছিলো এজন্য এমন অবস্থা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কাগজপত্রগুলা বিভাগের অফিসের ফ্লোরে পড়ে ছিলো। এজন্য সহজেই পোকা কেটে নিছে। তারা এটা উঠিয়ে নিতে বলেছিলো আমাদের ৩-৪ মাস আগে। এখন তারা এটা বলারও চেষ্টা করতেছে যে, আমরা ডকুমেন্টস ফেরত নিতে বলেছি। আপনারা নেন নাই, এক্ষেত্রে আপনাদের দোষ। সোজা বাংলায় ভিক্টিম ব্লেইমিং করার ট্রাই করতেছে আমাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক শিক্ষার্থী বলেন, কোনো জবাবদিহিতা নাই। একের পর এক ঘটনা ঘটে গেছে। আওয়ামীপন্থী শিক্ষক লিটন হোসেন সরাসরি শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষমতা চর্চা করতেন, হুমকি ধামকি দিতেন। জবি উপাচার্য সাদেকা হালিমের ক্ষমতা দেখাতেন সবক্ষেত্রে। এমনকি আন্দোলনের সময় তিনি সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কিন্তু ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান কাজী রবিউল আলম শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আটকিয়ে ওনাকে বাচিয়ে দেন। কিন্তু সেসসময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উপর প্রাতিষ্ঠানিক রেজাল্ট খারাপ করিয়ে দেওয়া, হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে সব করেছেন।  কিন্তু শেষমেষ ডিপার্টমেন্ট এতগুলো শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ধ্বংস করে ফেললো। এজন্যেই কি আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম?
এবিষয়ে জানতে চাইলে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক কাজী রবিউল আলম বলেন, এবিষয়ে জানার পর শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। যাদের মার্কসিটের ফটোকপি নাই তাদেরকে বিভাগ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছি। আর এবিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্তের জন্য কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে। কারন একাডেমিক কমিটির মিটিং এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভর্তির কিছুদিন পরে বিভাগে কাগজপত্রগুলো আসলে শিক্ষার্থীদের জানানো হয় যেন তারা সেগুলো তুলে নেয়। অনেকে তুলে নিলেও কিছু সংখ্যা থেকে যায়। এদিকে শিক্ষার্থীদেরও গাফিলতি আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
Comments (০)
Add Comment