এতিমখানায় ভুয়া ছাত্রের নাম দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা,ফিল্ড সুপার ভাইজার ও অফিস সহকারির যোগসাজসে এতিমখানায় ভুয়া ছাত্রের নাম ভর্তি করে প্রতি বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠান দুটি সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছানুযায়ী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব বিষয়ে বিস্তর অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কুড়িগামের রৌমারী উপজেলায় বন্দবেড় ইউনিয়নের টাপুরচর দারুল উলুম এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসাটি ২০০৫ সালে স্থাপিত হয়। যার রেজি নং কুড়ি-৬৫৩/২০০৯। অপরটি চর শৌলমারী ইউনিয়নের চর খেদাইমারী বায়তুল ক্কারার গোলাম হাবিব শিশু সদনটি স্থাপিত হয় ২০০২ সালে।

যার রেজি নং কুড়ি-৪৭০/২০০৪। এতিমখানা দুটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্রান্টপ্রাপ্ত হয়। টাপুরচর এতিমখানায় কাগজে ১১৫ জন ছাত্রের নামের তালিকা রয়েছে। সেখানে আবাসিক শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া গেছে ১৫ থেকে ২০ জন।

এদের জনপ্রতি খাবার, চিকিৎসা ও পোশাকের জন্য মাসে ২ হাজার করে বছরে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে জমা হয়। পরে এতিমখানার ব্যবস্থাপনা কমিটি ও সমাজসেবার অসাদু কর্মকর্তার যোগসাজসে উক্ত টাকা উত্তোলন করা হয়। বিলের কাগজ তৈরি করার সময় উপজেলা ফিল্ড সুপার ভাইজার আব্দুল্লাহ হেল কাফিকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয়। সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী তাদের খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। একই অবস্থা চর খেদাইমারী বায়তুল ক্বারার গোলাম হাবিব শিশু সদনের।

টাপুরচর দারুল উলুম এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, ভর্তি ১১৫ জন ছাত্র। এর মধ্যে ৬৫ জন পাশ্ববর্তী এফতেদায়ী মাদ্রসা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশোনা করে আবার এতিমখানায় ফিরে আসে। অনেক ছাত্রের বাবা-মা বেচে আছে এমন কিছু জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

এতিমখানার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবু হোসেন বলেন, যে বরাদ্দ পাই তা ছাত্রদের খাবার দিয়ে কিছু অর্থ বেশি হয়,তা দিয়ে মাদ্রাসার উন্নয়ন মুলক কাজ করছি।

উপজেলা সহকারি কর্মকর্তা জানান, আমি মুখপাত্র না,এ বিষয়ে কিছু জানতে চাইলে ডিডি স্যারের সাথে কথা বলেন।

এব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাসান সাদিক মাহমুদ (অতি:) বলেন, আপনারা সরেজমিনে যা পেয়েছেন তাই লেখে দেন।

কুড়িগ্রাম জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকুনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং তদন্ত করতে যাব। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তা এবিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।