কম্বোডিয়ান ছাত্রের উড়ন্ত গাড়ি তৈরির গল্প

কম্বোডিয়ার গরীব ও অভাবী পরিবার থেকে উঠে আসা প্রকৌশল বিদ্যার এক ছাত্র নতুন ধরনের মানুষ্যবাহী ড্রোন উদ্ভাবন করেছে। ইউটিউবে ভিডিও দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এনপিআইসি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ছাত্র তার শিক্ষক ও অন্য ছাত্রদের সহযোগীতায় এ ফ্লাইং কার তৈরী করে। সংবাদ সূত্র: A24 News Agency

তাদের এ ভাবনা বাস্তবে পরিনত হয় যখন তারা কম্বোডিয়ায় সফলভাবে প্রথম ফ্লাইং কার তৈরী করে। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কম্বোডিয়াও অন্যান্য দেশের মত প্রযুক্তিখাতে উন্নতির দিকে চোখ রাখছে, এবং এমন সব উদ্ভাবনের দিকে নজর দিচ্ছে যা দৈনন্দিন জীবনে কাজে আসবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র লন এ২৪ নিউজ এজেন্সিকে জানান, এসবের প্রতি তার আগ্রহ উচ্চ মাধ্যমিক থেকে। তখন থেকেই কোন মোবাইল হাতের কাছে পেলে তিনি কৌতূহলবশত তা খুলে দেখতেন, পরে আবার লাগানোর চেষ্টা করতেন।

লন বলেন, ”আমি স্কুল ডরমেটরিতে থাকি। আমিসহ আমরা দুই ভাই। আমার বাবা- মা কৃষক। আমি এ প্রজেক্ট করতে পেরে গর্বিত কিন্তু এখনো অনেক কিছু শেখার আছে। মানুষ্যবাহী এ ড্রোন প্রকল্পে আমি মূল কন্ট্রোলারটি বানিয়েছি।”

তার সহকর্মী তৃতীয় বর্ষের ছাত্র চরই সথেরা জানিয়েছেন, তিনি এ প্রজেক্টে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন কারণ তত্ত্বগত যে বিদ্যা তিনি শিখেছেন তা কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন তিনি। এ কঠিন প্রকল্প সম্পর্কে তিনি জানান, ”এ গাড়ীর ড্রোনটি বানানো ঝামেলাপূর্ণ ছিলো কারণ আমরা শুধুমাত্র ভিডিওতে এটি দেখেছিলাম।

আমাদেও কোন ধারণা ছিলো না কোথা থেকে শুরু করতে হবে। তাই আমরা আগে এটা বানানো নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করা শুরু করি। এরপর আমরা এটার নকশা আঁকি ও আলোচনা করে দেখি যে এটা যথেষ্ট ভালো ও মজবুত হবে কিনা। তারপর আমরা ড্রোনটির মূল অংশ, কারিগরি দিক ও প্রোগ্রাম ঠিক করি।”

তাদের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রধান সহকারী হওর সোক উন, ছাত্রদের নিয়ে তার গর্বের কথা জানান। তাদের এ কাজ দেশের প্রযুক্তিখাতে উন্নয়নের অবদান রাখাসহ দৈনন্দিন সমস্যা যেমন ট্রাফিক জ্যাম লাঘবে অবদান রাখবে বলে তিনি আশা করেন। তবে সোক উন গাড়ীর ড্রোনটিকে একটি ট্যাক্সি ড্রোনে রুপান্তরিত করার পরামর্শ দেন, যাতে করে এটি কৃষিকাজে বা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করা যায়।

উন বলেন, ”এটাদারুন উদ্ভাবন। ওরে বানানো গাড়ীটি আমাদের জন্য এক নতুন আধুনিক প্রযুক্তি। কিছু উন্নত দেশ এর আগে এরকম মানুষ্যবাহী ড্রোন বানানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা শতভাগ সফল ছিলো না।”

সবশেষে উন বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানী ও শ্রম মন্ত্রণালয়কে প্রকল্পটির ব্যয়ভার বহনে স্পন্সর করতে এগিয়ে আসার আহবান জানান কারণ এটি খুবই ব্যয়বহুল।