বৃহস্পতিবার দুপুরে শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছে ১০ কেজি হরিণের মাংস। পাচারকালে বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরা শিকারিরা ককশিট ভর্তি মাংস ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি।পরিবেশবাদীরা বলেন, নানা সময় হরিণ, হরিণের মাংস, চামড়া, ফাঁদসহ শিকারীরা আটক হলেও দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়নি কারও। মুক্তি পেয়ে আবার শিকারে জড়িয়ে পড়ছে তারা। নানা তৎপরতার পরেও দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অবৈধ হরিণ শিকার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বনকে হরিণ উপযোগী করে গড়ে তোলাসহ অবিলম্বে হরিণ শিকারিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সচেতন মহল বলছে প্রশাসনের দুর্বলতার কারণেই এটি সম্ভব হচ্ছে। অবশ্য প্রশাসনের দাবি, বন বিভাগ, পুলিশ ও কোষ্টগার্ডের যৌথ চেষ্টায় শিগগিরই বন্ধ হবে হরিণ শিকার। রেঞ্জের এক কর্মকর্তা জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের সীমাবদ্ধতাসহ বন বিভাগের জনবল সঙ্কট রয়েছে। তাই এত কম জনবল নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় না।অন্যদিকে, বনে শিকারিদের অবস্থান না জানায়, পাচারকারীদের ধরা গেলেও তাদের আটক করা যাচ্ছে না।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ষ্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. শামসুল হক জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র হরিণের মাংস পাচার করছে গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে এদিন দুপুর দুইটার দিকে তিনি বনরক্ষীদের নিয়ে বনসংলগ্ন সোনাতলা গ্রামে অভিযান চালান। এসময় চোরা শিকারিরা বনরক্ষীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ককশিটে ভরা মাংস ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়িসংলগ্ন মাঠের একটি খাদের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায়।
শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, এ ব্যাপারে বন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জব্দ করা মাংস আদালতের অনুমতি নিয়ে বিকেলে রেঞ্জ অফিস চত্বরে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন জানান, সম্প্রতি সুন্দরবন থেকে বেশ কিছু হরিণ ধরা ফাঁদ উদ্ধার করা হয়েছে। করোনার সুযোগ নিয়ে শিকারিদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বুধবার থেকে সুন্দরবনে রেড অ্যালার্ট জারি করে বনবিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে। করোনার ভয় উপেক্ষা করে বনরক্ষীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।