গৃহ পালিত পশু হিসাবে গাড়ল পালন সহজ ও লাভজনক ব্যাবসা

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা: গৃহ পালিত পশু হিসাবে গাড়ল পালন করা খুবই লাভজনক। এতে খরচ কম হয় লাভ হয় বেশি। দেশে গাড়ল পালনের অপর সম্ভবনা রয়েছে। স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় এর মাংসের চাহিদা ব্যপক। গাড়ল দেখতে ভেড়ারমত লাগে। কিন্তু ভেড়া নয়। ভারতের নাগপুর অঞ্চলের ছোটনাগপুরি জাতের ভেড়ার সাথে আমাদের দেশি ভেড়ার ক্রসব্রিড।

এই ক্রসব্রিডের নাম গাড়ল। গাড়ল এবং ভেড়ার সমন্বয়ে জন্ম নেওয়া বাচ্চাকে ক্রসব্রিড বলা হয়েছে। গাড়ল ভেড়ার থেকে বড় হয় এবং এর লেজ লম্বা হয়। গাড়ল বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে সহজে মানিয়ে নিতে পারে। এ জন্য পালন করা খুব সহজ। বাংলাদেশের রাজশাহী, মেহেরপুর, নওগা, যশোর অঞ্চলে গাড়লের খামার গড়ে উঠেছে।

গাড়ল সব পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে। এ রোগ ব্যধি কম হয়। এ জন্য গাড়ল পালন সহজ। ৬ থেকে ৮ মাস পর পর গাড়ল বাচ্চা দেয়। ২ থেকে ৪টি পর্যন্ত বাচ্চা হয়। ৩/৪ মাসের একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ৫/৬ হাজার টাকা। পূর্ণ বয়স্ক গাড়লের ওজন ৬০ থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত হয়। গাড়লের মাংস ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এর মাংস সুস্বাধু হওয়ায় চাহিদা বেশি।

গাড়ল সাধারণত কাঁচা ঘাস, বিচুলী, ভুষি, খৈলসহ সব ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। ভেড়ারমত গাড়লও একে উপরের অনুসরন করে চলে। এ জন্য গাড়ল পালন করা অনেক সহজ। তবে গাড়লে শান্তশিষ্ঠ দেখা গেলেও রাগি প্রকৃতির সুযোগ পেলে মাথা দিয়ে আঘাত করে।

পাইকগাছার মালথ গ্রামের মোঃ খানজু মোড়লের ভেড়ার খামার রয়েছে। তার খামারে ১৪টি ভেড়া, ৪টি ছাগল ও ১টি গাড়ল পালন করছেন। গাড়ল রাগি হওয়ায় ছিকল দিয়ে বেঁধে পালন করা হয়। খানজু মোড়ল জানান, তার দীর্ঘদিনের শখ ছিল সে গাড়ল পালন করবে। তাই সে বেনাপোল থেকে তালার আফিল দপ্তরীর মাধ্যমে ১৩ মাসের একটি গাড়ল ২১ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন।

তার খামারের ভেড়ার সাথে গাড়ল পালন করছেন। এখন গাড়লটি বয়স ২ বছর এবং ওজন প্রায় ৪০ কেজি। এ বিষয়ে পাইকগাছা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বলেন, পুষ্টির উৎস হিসাবে গাড়লের গুরুত্ব গরু-ছাগলের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। গাড়ল পালন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে।

এ কারণে গাড়লের খামারে প্রতি অনেকের আগ্রহ হচ্ছে। দিন দিন এর প্রসার বাড়ছে। গাড়ল পালনে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভুমিকা রাখছে।

Comments (০)
Add Comment