তাহরিমা খাতুনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে প্রার্থী এখন ৩ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের প্রার্থী কামরুজ্জামান খাঁন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক যুবলীগ নেতা সামিউল হক লিটন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে তাহরিমা খাতুন বলেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আমাদের পরিবার জড়িত। যেহেতু এই উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না, তাই পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে আমি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি।
তবে তিনি ও তার স্বামী বিএনপির কোনো পদে রয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের কোনো পদ-পদবি নেই। তবে আমরা বিএনপির সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান আরও জানান, গত ৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। আপিলের পর তাদের কারো মনোনয়নপত্র বৈধ হয়নি বলেও জানান তিনি।
মনোনয়নপত্র বাতিলকৃত প্রার্থীরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ও জাসদ মনোনীত প্রার্থী মুনিরুজ্জামান মুনির।
রিটার্নিং কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ভোটারের স্বাক্ষর জালের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকারের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়। অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঋণখেলাপির দায়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ও একটি ঋণের জামিনদার থাকায় সেটি ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে জাসদের প্রার্থী মুনিরুজ্জামান মুনিরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহা. জিয়াউর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের নাবীউল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী খুরশিদ আলম বাচ্চু, জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাম মোস্তফা।
উল্লেখ্য, সংসদীয় আসন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) থেকে বিএনপির সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করায় আসন ২টি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ৫ জানুয়ারি, বাছাই করা হয় ৮ জানুয়ারি, প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ১৫ জানুয়ারি ও ১৬ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট) আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১ হাজার ১৭০ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৪ হাজার ২৮০ জন। ভোটাররা ১৮০টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ২৩০টি ভোট কক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ১১ হাজার ৪৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৮ হাজার ৮৮৩ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৬১২ জন। এই আসনে ১৭২টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ২৪০টি ভোট কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা।