ছোটবেলায় কীভাবে জন্মদিন পালন করতেন শচীন?

শচীন টেন্ডুলকার। ছবি : শচীন টেন্ডুলকারের ফেসবুক থেকে নেওয়া

বাইশ গজে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন বহুবার। সেঞ্চুরিও ছুঁয়েছেন শতবার। এবার জীবনের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার। গতকাল সোমবার (২৪ এপ্রিল) ৫০তম জন্মদিন ছিল ভারতীয় লিটল মাস্টারের।

বয়সের হাফসেঞ্চুরি ছোঁয়ার দিনে শুভেচ্ছায় ভাসেন শচীন। তবে বিশেষ দিনকে ঘিরে তিনি ফিরে গেলেন অতীতেও। মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা স্মৃতি তুলে ধরে জানালেন, ছোটবেলায় কীভাবে জন্মদিন কাটতো তাঁর।

ভারতীয় দৈনিক মিড ডে কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শচীন টেন্ডুলকার ফিরে যান অতীতে। ছোটবেলার জন্মদিন পালন করা হতো কি না জানতে চাইলে ভারতীয় তারকা বলেছেন, ‘আসলে ওই রকমভাবে হতো না। অনেক বড় কোনো আয়োজন হতো না। খুব সাধারণভাবে কেক কাটা হতো। কোনো বড় পার্টি হতো না। অল্প কয়েকজন বন্ধুরা আসত। এরপর যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করলাম তখন আয়োজন আরও কমে গেল। আমি আসলে ছেলেবেলার জন্মদিন খুব একটা মিস করি না। কারণ, স্কুলে থাকার সময়ে ওই রকম বড় করে জন্মদিন উদযাপন করা হয়নি কখনো।’

১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল জন্মেছিলেন শচীন। বাবা রমেশ টেন্ডুলকার ছিলেন প্রখ্যাত মারাঠি ঔপন্যাসিক। কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী শচীন দেব বর্মনের ভক্ত ছিলেন। তার নাম অনুসারেই রাখেন সন্তানের নাম। ঠিক পঞ্চাশ বছর পর, শচীনের নামে এখনও অনেকে সন্তানের নাম রাখে। তবে সেই শচীনটা দেব বর্মন নয়, টেন্ডুলকার। ভারতের তেরঙ্গাকে বাইশ গজের ময়দানে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা সম্ভাব্য প্রথম সুপার হিরো।

মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা শচীন যেন বাইশ গজে গ্যাব্রিয়েল মার্কেজের সাহিত্য, হুডিনির মায়াজাল, ভ্যান গগের রংতুলির মিশেলে তৈরি শান্ত এক ঢেউ। যে ঢেউয়ের ভেলায় ভেসে যেতে চায় সবাই। প্রায় দুই যুগের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে যার কোনো সমালোচক ছিলেন না, যাকে কেউ অপছন্দ করতেন না।

২০১১ সালের বিশ্বকাপটা ভারত মনপ্রাণ দিয়ে জিততে চেয়েছিল শুধু এই একটি মানুষের জন্য। যে মানুষ নিজের বিনয় নিয়ে অনায়াসে বলতে পারেন- ‘আমি নম্র, সহজ, সরল হওয়ার মানে এই নয়, আমি আত্মবিশ্বাসী নই। আমি নিজের ভেতর সরলতাকে লালন করি এবং এগিয়ে চলি’; তার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে দুবার ভাবতে হয়নি ভারতীয়দের।

১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬ বছর বয়সে অভিষেক থেকে ২০১৩ সালে শেষ করার আগ পর্যন্ত ক্রিকেটের সঙ্গে অলিখিত চুক্তি ছিল শচীনের। দু’জন দু’জনকে নিঃস্বার্থভাবে ততটা দেবেন, যতটা উজাড় করে দেওয়ার পরেও মনে হবে, কিছুই তো দেওয়া হলো না!

ক্যারিয়ারে ঠিক ২০০টি টেস্ট খেলে থামেন শচীন। সাদা পোশাকে করেন ১৫ হাজার ৯২১ রান। যেখানে সেঞ্চুরি ছিল ৫১টি আর হাফসেঞ্চুরি ৬৮টি। ওয়ানডেতে শচীন খেলেন ৪৬৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ৪৯টি সেঞ্চুরিতে রান করেন ১৮ হাজার ৪২৬। হাফসেঞ্চুরি করেন ৯৬টি। ২৪ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬৬৪ ম্যাচ খেলে করেছেন মোট ৩৪৩৫৭ রান করেছেন ভারতের এই ব্যাটিং জিনিয়াস।

Comments (০)
Add Comment