জানান যায়, শিশু নাদিয়াকে সঙ্গে নিয়ে গোমস্তাপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের এক দম্পত্তি। ভাই বোনদের নিয়ে নিয়ামতপুর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এসেছিলেন জমি রেজিষ্ট্রির কাজে। দলিলে স্বাক্ষর করার কোন এক সময় নাদিয়া আলাদা হয়ে যায় মার হাত থেকে। পরে ওই শিশুটিকে বোর্ডিং মার্কেট থেকে উদ্ধার করে ইউএনও অফিসে নিয়ে যায় রাসেল ও আব্দুল্লাহ নামের দু’যুবক। পরে শিশুটিকে মায়ের কোলে তুলে দেন ইউএনও জয়া মারীয়া পেরেরা।
শিশুটিকে উদ্ধারকারী যুবক রাসেল জানান, তারা বোর্ডিং মার্কেটের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল্লেন। এমন সময় তাদের চোখে পড়ে ছোট্ট শিশুটি কাাঁদছে এবং এলামেলো ভাবে ব্যস্ততম রাস্তার এপার ওপার ছুটোছুটি করছে। রাস্তায় চলছে বাস, ট্রাক, অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন। শিশুটির এমন ছুটোছুটিতে যে কোন সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। অথচ শিশুটিকে উদ্ধারে এগিয়ে আসছেনা কেন তার স্বজনরা এমন ভাবনা মাথায়। অবশেষে মা-বাবাকে হারিয়ে শিশুটি ভেবেই তাকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে নাম ঠিকানা জানতে চাইলে কিছুই বলতে পারেনা সে। শুধু কেঁদেই চলে। শিশুটির হৃদয়বিদারক কান্না এবং নাম ঠিকানা বলতে না পারায় অবশেষে ইউএনও স্যারের নিকট নিয়ে যায়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে।
ইউএনও জানান, শিশুটিকে পাওয়ার পর তার নাম জানতে চান তিনি। কিন্তু ভয়ে কথায় বলছিলোনা নাদিয়া। তাকে স্বাভাবিক করতে চিপস ও চকলেট দেয়া হলেও অনবরত কাদছিলো সে। সংবাদটি ওসিকে জানানো হলে অফিসে আসেন তিনি। এরি মধ্যে প্রচার করা হয় হারিয়ে যাওয়া শিশুটি এখন ইউএনও দপ্তরে। সংবাদ পেয়ে শিশুটির মা ছুটে আসেন তা অফিসে। মাকে দেখেই শিশুটি দৌঁড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন মা’র কোলে। মা-মেয়ের মিলনের স্বর্গীয় এক দৃশ্যের অবতারনা হয় তার অফিসে। যে দৃশ্য কখনও ভুলার নয়। পরে তিনি সবার উপস্থিতিতি শিশু নাদিয়াকে তুলে দেন তার মায়ের কোলে।
শিশুটিকে কোলে পাওয়ার পর মা আবেগে আপ্লুত হয়ে ধন্যবাদ জানান ইউএনওকে। তিনি বলেন, এ বিবেকবান দুটি ছেলে শিশুটিকে উদ্দার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে হয়তো কোন প্রতারক চক্র তার মেয়ে নাদিয়াকে তুলে নিয়ে যেতে পারতো। হয়তো চিরকালের মতো খালি হয়ে যেতো তার কোল। তাই রাসেল ও আব্দুল্লাহর এমন মহানভবতায় তাদেরও ধন্যবাদ জানান এবং তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করেন।