ফ্রান্সে একদিনে রেকর্ড ৩৬৫ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনা ভাইরাসে ভয়াবহ সংকট পার করছে ফ্রান্স। বিপর্যস্ত দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৯৬ জনে।

এই ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৯২২ জনসহ মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৯ হাজার ১৫৫ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৯৪৮ জন।

ফ্রান্সে বর্তমানে ২২ হাজার ৫১১ জন আক্রান্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৯ হাজার ১৩৬ জনের অবস্থা সাধারণ। বাকি ৩ হাজার ৩৭৫ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিউতে রয়েছেন

উল্লেখ্য, চীন থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। সেখানে ভাইরাসটি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসলেও অন্যান্য দেশে বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৭৮৯ জন। এ নিয়ে করোনা ভাইরাসে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৪ হাজার ৭১ জনে। এর মধ্যে চীনে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৯২। চীনের বাইরে মারা গেছে ২০ হাজার ৭৭৯ জন।

বিশ্বজুড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ হাজার ৭৬৪ জনসহ আক্রান্ত হয়েছে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৯ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৪২ জন সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৪০ জন। এছাড়া চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৫৯ জন।

বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৭৮৬ জন আক্রান্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৯ জনের অবস্থা সাধারণ। ১৯ হাজার ৩৫৭ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিউতে রয়েছেন।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেয়াসুস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারগুলো এই বৈশ্বিক মহামারি ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি সরকারগুলোকে নিজ নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।

করোনা ভাইরাস পৃথিবীজুড়ে অদ্ভুত এক আঁধারের ছায়া নিয়ে এসেছে। চারিদিক নিরব, নিস্তব্ধ। কেউ কারও সাথে মিশছে না বা চাইছে না। যেন সবাই সবাইকে এড়িয়ে যেতে পারলেই বাঁচে। ‘বিশ্ব গ্রাম’ ধারণায় মানুষ অনেক বছর ধরেই একাকি জীবনের অভ্যস্ত হয়ে উঠছিল। কিন্তু এতটা একাকি হয়তো তারা কখনোই হয়নি। যে চাইলেও তারা একে অন্যের সাথে দেখা করতে পারবে না। সবাই যেন এক যুদ্ধ কেন্দ্রীক জরুরি অবস্থায় রয়েছে।

এক করোনা ভাইরাস পুরো বিশ্বকেই যেন স্তব্ধ করে দিয়েছে। অধিকাংশ দেশেই রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, শপিংমল-মার্কেট, রেস্তোরাঁ-বার ফাঁকা। যেন সব ভূতুড়ে নগরী, যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থা চলছে। সবার মধ্যে ভয়, আতঙ্ক আর আশঙ্কা।

উহান, চীনের শিল্পোন্নত এই শহর থেকেই প্রথম করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ভাইরাসটি প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে আসলেও চীনের বাইরে ব্যাপক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

চীনে উদ্ভূত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯৯টি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এ রোগের কোনো উপসর্গ যেমন জ্বর, গলা ব্যথা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। জনবহুল স্থানে চলাফেরার সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বাড়িঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে এবং খাবার আগে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।

Comments (০)
Add Comment