অনুসন্ধানে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের ফুলজোর গ্রামের নিরু মিয়ার মেয়ে ফুলজোর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী সোনিয়া খাতুনের সাথে বিশ্ব শিশু ও কন্যা দিবসের দিন গত শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কাজিপুরের এক ছেলের সাথে বিয়ে হয় এবং ওই দিনই মির্জাপুর ইউনিয়নের শংকরহাটা গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে তালতা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী আখি খাতুনকে তালতা গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সুমনের সাথে বিয়ে হয়। খামারকান্দি ইউনিয়নের ঘোড়দৌড় নতুনপাড়া গ্রামের নবা মুন্সির মেয়ে ঘোড়দৌড় এনপি আলিম মাদ্রাসা থেকে চলতি বছর দাখিল পাস করা সুরভী খাতুনকে গত বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পাশ্ববর্তী শাজাহানপুর উপজেলার নগর হাটখোলা এলাকায় মোখলেছুর রহমানের ছেলে এনামুলের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। মির্জাপুর ইউনিয়নের তালতা শেখপাড়া গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে তালতা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী শাহানাজকে গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কুসুম্বী ইউনিয়নের আমইন গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে শামিমের সাথে বিয়ে হয়। মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী নুপুর খাতুনকে গত শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) একই গ্রামের নইমুদ্দিনের ছেলে সাগরের সাথে বিয়ে হয়। একই গ্রামের শাহাদৎ হাজির মেয়ে মির্জাপুর উত্তরপাড়া দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেনীর ছাত্রী সুমাইয়া খাতুনের সাথে গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সুঘাট ইউনিয়নের খিদিরহাসড়া গ্রামের ছানোয়ার ড্রাইভারের ছেলে শাহিন আলমের সাথে বিয়ে হয়। এসব বিয়ের অনুষ্ঠানে ইউপি সদস্য, শিক্ষক ও বিয়ে নিবন্ধকরা (কাজি) উপস্থিত থেকে রেজিষ্ট্রি ছাড়া কালেমা পরে সম্পন্ন করে। বাল্য বিয়ের খবরগুলো উপজেলা নির্বহিী কর্মকর্তা এবং শেরপুর থানায় মৌখিক ও লিখিতভাবে অভিযোগ দিলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বিধায় অবাধে চলছে এ বাল্য বিয়ে। ক্রমেই বাল্য বিয়ের প্রবনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সচেতন মহলের মনে ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে। বাল্য বিয়ের কু-ফল সম্পর্কে জানতে চাইলে পাবনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা.আখতারুল আলম আজাদ জানান, মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া ও গর্ভপাতের সময় রক্তক্ষরণ, গর্ভকালীন সমস্যা, স্বাস্থ্যহানি ও পুষ্টি হীনতা, জরায়ু ক্যান্সার ও টিউমার, অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে ঘন ঘন সন্তান নেয়ার ফলে অকালে বার্ধক্যসহ নানাবিধ দৈহিক ও মানষিক সমস্যায় ভুগতে পারেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ এরফান বলেন, বাল্য বিয়ের ঘটনার কোন খবর পেলেই সরেজমিনে গিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সরোয়ার জাহান বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্তমান সরকার বাল্য বিয়ে রোধে নানাবিধ কর্মসুচী বলবৎ রাখলেও বগুড়ার শেরপুর উপজেলা, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্র্যকরী পদক্ষেপ না নেয়া ও উদাসীনতায় বাল্য বিয়ের প্রবনতা বাড়ছে বলে খোদ সচেতন মহলে অভিমত রয়েছে।