বিএনপির অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। নগরীর বিমান চত্বরে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি নওদাপাড়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, আছে, আগামীতেও থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন দিচ্ছেন, আরো দিবেন, আরো কাজ বাকি আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ একটা একটা করে সমাপ্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী।
সমাবেশে খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, আমরা দেখছি, তাদের নেতৃবৃন্দ পলিসি নিয়েছেন, দুইদিন বা তিনদিন আগে সমাবেশের মাঠে গিয়ে পিকনিক করার মতো সবাই এক জায়গায় জমায়েত বসিয়ে কোথাও হাড়িতে রান্না হচ্ছে, কোথাও গান-বাজনা হচ্ছে, কোথাও গল্প-আড্ডা হচ্ছে। এই যদি আপনাদের (বিএনপির) রাজনীতি হয়, ওই রাজনীতি আপনারা করতে থাকেন। ইনশাল্লাহ আমাদের পশমও ছিড়তে পারবেন না।
বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, বগুড়া, রাজশাহী জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কয়টা লোক আনতে পারে, কয় লক্ষ লোক আনতে পারে সেটা আমরাও দেখতে চাই। কারণ অতীতেও আমরা দেখেছি, মাদ্রাসা মাঠের ওই রাস্তাটায় তারা ঠিকমতো ভরাট করতে পারে না।
রাসিক মেয়র লিটন বলেন, তারেক জিয়া লন্ডবে বসে বর্তমান বিশ্বকাপে জুয়াতে ইংল্যান্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছেন নিজেকে জুয়ারী হিসেবে। যে কুলাঙ্গার প্রকাশ্যে নিজেকে জুয়ারী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেয়। তাকে বাংলাদেশের মানুষ কখনো মেনে নিতে পারে? পারে না।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, এই বাংলাদেশে বসবাস করে মির্জা ফখরুলেরা তাদের লোকদের মাধ্যমে লন্ডনে, মালয়েশিয়া, সৌদে আরবে আমাদের প্রবাসী ভাইদের , যারা রেমিটেন্স পাঠান ব্যাংকিং চ্যানেলে, সরকারের আয় হতো, তারা তাদের উসকানী দিয়ে বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে দিলে কম টাকা পাওয়া যাচ্ছে, ডলারে ৭/৮টা বেশি পাওয়া যাবে হুন্ডি করে টাকা পাঠালে। তারা কী দেশপ্রেমিক হতে পারে? তারা দেশের ক্ষতি করছে, প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়ের প্ররোচিত করছে।
মেয়র আরো বলেন, এখন সুখের বিষয় চলতি মাসে রেমিটেন্স ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান সাহেব বাংলাদেশে কখনো দুর্ভিক্ষ হবে না। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে, আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে আর কোনদিন দুর্ভিক্ষ হবে না। এই বাংলাদেশের মানুষ যে পরিমান শস্য ফলায়, এই ফলন আরো বাড়ছে। কারণ শেখ হাসিনা সরকার নিরলসভাবে গবেষণা করে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই কাজটি করছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি বলছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। নির্বাচন হতে দিবো না।’ এটি বিএনপি ও তাদের সঙ্গে যারা আছে তাদের কথা। দেশটা কি বিএনপি-জামায়াতের বাপ-দাদার তালুক? যে তাদের কথায় চলবে? সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। উচ্চতর আদালত থেকে রায় এসেছে যে, আর কেয়ারটেকার সরকারের দরকার নেই। উন্নত বিশ্বে ভারত, ইংল্যান্ড ইত্যাদি দেশে ক্ষমতাসীন সরকার বহাল থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেইভাবে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা তাদেরকে আসবার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তাদের সব কথাতেই না। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই না বলা। সেই না না এখনো চলছে। ওই না‘য়ে বাংলাদেশ থেমে নেই। বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আখতারুল আলমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু। সঞ্চালনা করেন শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শাহু।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোহেল, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী, সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।