ভোটে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না হাসিনা- গয়েশ্বর

বিডি সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম : জনগণের ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনা কখনও প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘আজকে শেখ হাসিনা যদি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতো তাহলে ইলিশ মাছ রান্না করে (ভারতকে) খাওয়াতে হতো না।’
সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দীর্ঘ ৫ বছর ধরে গুম (নিখোঁজ) হওয়া এম ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যের তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট বিভাগ সংহতি সম্মিলনী এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর বলেন, ‘রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশ। অথচ ভারতের কথা বার্তায় মনে হয়- আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করি নাই। তারা (ভারত) ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে বিভক্ত করেছে। আর সে কারণেই আমাদের অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত করে। কয়েকদিন আগে যিনি (প্রধানমন্ত্রী) গেলেন ভারত সফরে তিনি বললেন- ‘আমি কিছু চাইতে যাইনি’। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চাইতে যাননি, তিনি দিতে গিয়েছেন। ফলে ভারতের আবদার ও চাওয়া পাওয়া রক্ষায় যতটা না আমরা সোচ্চার, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা তারও বেশি নতজানু। কারণ ক্ষমতা আমাদের দেশের হাতে নাই। সে কারণে আমরা দাসীগিরি করতে পারি। ইলিশ মাছ রান্না করে ‘দাদাবাবু’দের খুশি করাতে পারি। কিন্তু আমি আমার ন্যায্য পাওনা আদায় করতে পারি না। কাজেই এটা প্রধানমন্ত্রীর সফর নাকি ভাইয়ের বাড়িতে নাইয়র গেছেন তাই প্রশ্ন?’
তিনি বলেন, ‘এম ইলিয়াস আলী জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রথম এবং সর্বশেষ নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। আন্দোলন-সংগ্রাম-প্রতিবাদ এর অপর নাম ইলিয়াস। জাতীয় স্বার্থরক্ষায় অবদান থাকায় আজ তাকে দেখতে পাচ্ছি না। জানি না কখন পাবো কিভাবে পাবো। তাই আমরা যদি ইলিয়াস আলীর মতো নিবেদিত হতে পারি তাহলে আজকে যে বেড়াজালে পড়েছি তা থেকে মুক্তি পেতে বেশি সময় লাগবে না। আজ তিস্তায় জল নেই। আমার চোখেও জল নেই। সে জন্য সাথী ইলিয়াস আলী’র শোকেও চোখে জল আসে না।’
আমরা (বিএনপি) নানা জটিলতায়, নানা দুর্ভাবনায় আছি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা একই ঘরে আছি। সবাই নজির হিসাব নিয়ে ব্যস্ত। কতটুকু আমাদের সম্মিলিত সামর্থ্য আছে তা বিবেচনার সুযোগ নেই। যেন আমরা চলন্ত বাস অথবা ঝুলন্ত ট্রেনে বসে আছি। সবাই সবার দিকে তাকায় কিন্তু কিছু বলি না। সবাই জেগে থাকে কেউই ঘুমায় না। প্রত্যেকে প্রত্যেককে সন্দেহ করে। সবাই সবাইকে পাহারা দিচ্ছি এবং কোনো কাজ না করে গন্তব্যে নেমে যাচ্ছি। কাজেই আজকে একটি বিষয়ে স্পষ্ট হতে হবে এই যে, সুবিধাবাদী আর জাতীয়তাবাদী এক সঙ্গে বসবাস করতে পারে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে ভারত শেখ হাসিনাকে দাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ক্ষমতায় রাখতে চায়। তাই তারা নিরাপত্তার নামে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিরাপত্তা অনিশ্চিতভাবে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশের সীমান্ত ঘিরে রেখেছে ভারত। তাই যদি হয় তাহলে কেন ভারতের সাথে চুক্তি? কাকে গুলি করা হবে। সীমান্তেই তো গোলাগুলি হয়। সীমান্তের চারদিকে যদি ভারত থাকে তাহলে চুক্তির প্রয়োজন কেন?’
তিনি বলেন, ‘বন্ধুত্ব চুক্তি দিয়ে হয় না। বন্ধুত্ব যখন বিয়েতে পরিণত হয় তখন কাবিন লাগে। আর সেই কাবিনের বিয়েও বেশি দিন টিকে না যদি আগের বন্ধুত্ব ভালো না থাকে। তখন কাবিন কাজে লাগে বিচ্ছেদের সময়। কাজেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এই চুক্তি বিচ্ছেদের জন্য কাজে লাগতে পারে। অন্যথায় এই চুক্তি কখনও কাজে লাগতে পারে না।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাউয়ূম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম, কলিম উদ্দিন মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, সুলতানা আহমেদ, হেলাল খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, সহ-সভাপতি এমজল হোসেন পাইলট প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দীর্ঘদিন ধরে গুম (নিখোঁজ) থাকা এম ইলিয়াস আলী’র স্ত্রী তাহমিনা রুশদি লুনা।ব্রেকিংনিউজ

Comments (০)
Add Comment