মহাদেবপুরে মংলু পাগলার জমানো টাকা ফিরিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলের বণিক সমিতির সভাপতি মনি

মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে মংলু নামের এক পাগলের জমানো ৬০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বাসষ্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মো. মনিরুল হক মনি। শনিবার রাতে বাসষ্ট্যান্ড বণিক সমিতির কার্যালয়ে মংলু পাগলার মৃত বড় ভাই বিশু উড়াওয়ের ছেলে মুহিত চন্দ্র উড়াও ও মংলুর আরেক ভাই সুমীর উড়াও (সমর) এর হাতে এ টাকা তুলে দেয়া হয়। মংলু উপজেলার জোয়ানপুর গ্রামের মৃত রিজা বাবুর ছেলে। যাকে মংলু পাগলা নামে মহাদেবপুরের সবাই চিনতো।

বিশেষ করে যারা মহাদেবপুর বাজার ও আশপাশের এলাকায় বসবাস করেন। তিনি গত ১৫ই জুন বৃহস্পতিবার রাতে আকষ্মিক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো প্রায় ৭৫ বছর। তিনি ছোট থেকেই মহাদেবপুর বাজার এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। বিভিন্ন সময় তার পছন্দের মানুষগুলোর কাছ থেকে ৫-১০ টাকা চেয়ে নিতেন। অপরিচিত বা অপছন্দের মানুষের কাছ থেকে কখনো টাকা বা কোন সহযোগীতা নিতেন না।

মানুষের কাছে চেয়ে চিন্তে যে টাকা পেতেন তারমধ্যে থেকে খাওয়া-দাওয়ার পর বেঁচে যাওয়া টাকাগুলো জমা রাখতেন বাসষ্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মনিরুল হক মনির কাছে। এভাবে ১৫ বছরে তার প্রায় ৬০ হাজার টাকা জমা হয়। মংলু পাগলার আকষ্মিক মৃত্যুর খবর পেয়ে মনিরুল হক মনি খুঁজতে থাকেন মংলুর উত্তরসুরীদের। এক সময় তিনি পেয়েও যান মংলুর, ভাই ও তাদের ছেলেদের। তাদেরকে জানান, মংলুর জমাকৃত টাকার কথা। সময়, ক্ষণ ঠিক করে মংলুর জমাকৃত ৬০ হাজার টাকা তুলে দেন মংলুর আপনজনদের হাতে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাসষ্ট্যান্ড বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক উৎপল ঘোষ, উপজেলা আ.লীগের প্রচার সম্পাদক বিশ্বনাথ অধিকারী গোপাল, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি বরুন মজুমদার, মহাদেবপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আইনুল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মো. মকলেছুর রহমান, সাংবাদিক আমিনুর রহমান খোকন, মো. মেহেদী হাসানসহ মংলুর আতœীয়-স্বজন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে বাসষ্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি মো. মনিরুল হক মনি বলেন, মংলু তাকে বিশ্বাস করে প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রতিদিনই তার কাছে ১০, ২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্তও জমা দিতেন। তার টাকাগুলোর হিসাব রাখার জন্য আলাদা একটি খাতায় লিখে রাখা হতো। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে প্রায় ৬০ হাজার টাকা জমা করেছিলো। মংলুর মৃত্যুর পর তার পরিবারের লোকজনের হাতে টাকাগুলো তুলে দিতে পেরে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মংলু পাগল হলেও একজন সৎ ও ভালো মানুষ ছিলো।

Comments (০)
Add Comment