রাবিতে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মদিন পালন

রাবি প্রতিনিধি: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আধুনিক খেলাধুলার পথিকৃৎ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি)  আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার বেলা ১১টায় শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজউদ্দীন   আহমদ সিনেট ভবনে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান   বিভ্যগের আয়োজনে আলোচনা সভায় মূল আলোচকের বক্তব্যে রাবি শিক্ষা ও গবেষণা     ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস   বলেন, আগস্ট মাস বাঙালি জাতির শোকের মাস। বাংলাদেশের ইতিহাসের চেয়ে বাঙ্গালিদের ইতিহাস আরও বিস্তৃত ।

বাঙালির এ সুদীর্ঘ  ইতিহাসে বিস্তৃত রক্তাক্ত এবং  মর্মান্তিক ঘটনা নানা ঘটনা আছে। যারা বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানেন, বাঙালির   ইতিহাস সম্পর্কে জানেন নৃশংসতায় এই ১৫ই আগস্ট  অতীত ইতিহাসের যেকোনো ঘটনাকে অতিক্রম করে যায়।  তিনি বলেন,  ৭১ এরপর আমাদের তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সময়  অনেক তরুণ নীরবে ভূমিকা পালন করেছে। তেমনি একজন হলেন শেখ কামাল। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর ছেলে হিসেবে নয় আমরা যদি বাংলাদেশের সমাজ পরিবর্তনের, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে ও ক্রীড়াসংস্কৃতির পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মানুষ খুঁজি তাহলে শেখ কামালের মতো দ্বিতীয় আর কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র, সমাজ এবং বৈশ্বিক যে গতিশীলতা, বিচরণ এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার যে প্রতিজ্ঞা সেখানে তরুণ সমাজে শেখ কামালের জীবনী থেকে অনুপ্রেরণা পেতে পারে। শেখ কামাল কখনোই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলেনি। আমরা যদি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ গড়তে চাই তাহলে সংস্কৃতিকে দেখার দৃষ্টিকোণ, ক্রিড়া জগৎকে দেখার দৃষ্টিকোণ, সমাজ-রাষ্ট্রকে দেখার দৃষ্টিকোণ বদলাতে হবে এবং সেই বদলানোর জায়গাতে শেখা কামালের দৃষ্টিভঙ্গি, তারঁ কাজ, কৃতিত্ব আমাদের পথ দেখাবে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আগস্টের এই মাসেই জাতির জনক, বাঙালি জাতির দিশা এবং তার   পরিবার দুটি কন্যা ব্যতিত সবাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল এদেশের যুদ্ধাপরাধীরা, তাদের দোসররা। বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করলে বঙ্গবন্ধু অনিবার্য   হিসেবে আসে এবং আসেন তাঁর কন্যা আমাদের প্রাণপ্রিয় জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি আজীবন তাঁর এই স্বজন হারানোর ব্যাথা বয়ে বেড়াচ্ছেন। একারণেই তিনি আমাদের জন্য অনিবার্য ।

উপাচার্য আরো বলেন, আমার কাছে শেখ কামাল একজন নির্মল তারুণ্যের অগ্রদূত। তিনি ক্রীড়াঙ্গনের রোদেলা সকাল। উনি যেভাবে আমাদের মাঝে অভিভূত হয়েছিলেন সেটা জানতে হলে প্রথমে জানতে হবে তিনি পারিবারিক কোন আবহে মানুষ হয়েছেন। আমরা জানি বঙ্গবন্ধুর ঘরে তার জন্ম সেখান থেকে পারিবারিক যে শিক্ষা তিনি দেখেছেন স্বাধীনতার যে বীজ বিস্তৃত করছিলো, সেগুলো তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। শেখ কামালের জীবন এত বড় একটা ক্যানভাস এটা বলা বাহুল্য। আমার মনে হয় যে এই নশ্বর পৃথিবীতে সব শেষ হয়ে গেলেও মানুষের স্বপ্ন থেকে যায়। স্বপ্ন, সভ্যতা ও ভবিষ্যৎ মানুষের গন্তব্যের স্থল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল- ইসলাম বলেন, শেখ কামাল ছিলেন  একজন অগ্রগামী পুরুষ  এই সমাজকে, এই রাজনীতিকে, সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করে দেশের আদর্শের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা উনি করেছেন তা প্রশংসনীয়। উনি রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি, সাহিত্য চর্চায় নেতৃত্ব দিলেন। এবং উনি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন।  এখান থেকে প্রমাণিত হয় তিনি ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান বহুকাল বেঁচে থাকে, সেই প্রতিষ্ঠান মানুষকে আদর্শের দিকে ধাবিত করবে।

শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সালাহ্ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে  আরও বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অবঃ) অবাইদুর রহমান প্রামানিক।

রাবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম আলোচনা সভাটি উপস্থাপনা করেন।

এসময় বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক- শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments (০)
Add Comment