র‍্যাবকে আমেরিকা যেমন ট্রেনিং দিয়েছে, তেমনই কার্যক্রম করেছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমেরিকাই র‍্যাব সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে। আমেরিকা তাদের ট্রেনিং দেয়, তাদের অস্ত্রশস্ত্র এবং তাদের হেলিকপ্টার এমনকি, তাদের ভিজ্যুয়াল সিস্টাম, আইসিটি সিস্টেম, সবই আমেরিকার দেওয়া।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা যখন স্যাংশন দেয় এবং কোনো কথা বলে বা অভিযোগ আনে, তাদেরকে আমার একটাই কথা, যেমন আপনারা ট্রেনিং দিয়েছেন, তেমনই তারা কার্যক্রম করেছে। এখানে আমাদের করার কী আছে?’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘র‍্যাব আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী হিসাবে কাজ করছে। সে র‍্যাব হোক আর পুলিশ হোক, যদি কোনো অপরাধ করে, তার কিন্তু বিচার হয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আপনারা দেখেছেন, পুলিশ ইচ্ছা করে মারলেও তাদের কিন্তু সহাসায় বিচার হয় না। শুধু একটা বিচার হলো, যখন আমেরিকার লোক সবাই আন্দোলনে নামল তখন। শুধু একটাই বিচার তারা সারা জীবনে করতে পেরেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কথায় কথায় গুলি করে মেরে ফেলে দেয়। ছোট্ট বাচ্চাদের গুলি করে মেরে ফেলে দেয়। খেলনা পিস্তল দিয়ে তাদের মেরে ফেলে দিল, আমাদের কতজন বাঙ্গালি মারা গিয়েছে সেখানে, কিন্তু তারা কিছু বলেনি। সে কথাগুলো আমি স্পষ্টভাবে বলেছি। আমি কিন্তু বসে থাকিনি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা এ নীতিতে বিশ্বাস করি। রাষ্ট্রের সমস্যা থাকতে পারেই। কারও সঙ্গে আমরা কোনো ঝগড়া বিবাদে যাই না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মাঝে মধ্যে স্যাংশন ও জিএসপি বাদ দিল। দুর্ভাগ্যের কথা হলো, আমাদের দেশের কিছু লোক এর সঙ্গে জড়িত।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু লোক সিনেট ও লোকালম্যানদের কাছে বানোয়াট মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে। যারা করে, তারা নিজেরা একটা অপকর্ম করেই দেশ ছাড়া। কোনো না কোনো অপরাধে তারা অপরাধী অথবা চাকুরিচ্যুত। এটা শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না, পৃথিবীর কয়েকটি দেশে তাদের কার্যক্রম একটু যদি দেখেন, কোনো না কোনো অঘটন, কোনো না কোনো খারাপ কাজ করে দেশ ছেড়েছে। ওখানে গিয়ে নানা কথা বলছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, আমরা অনেকের বিচার করেছি। তাদের ছেলেপেলেরাও আছে, আবার অনেকে পলাতক রয়েছে। তারা বিরাট অর্থের মালিক এবং বাংলাদেশ থেকে তারা ২১ বছর ক্ষমতায় থেকে অনেক টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে। তারাও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার থাকে ও অপপ্রচার চালায়। এরকম বহুঘটনা আছে।’

গত ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং রাজা তৃতীয় চার্লস আয়োজিত অভ্যর্থনায় যোগ দেন। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সময় ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সফরের শেষ ভাগে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এরপর দেশে ফিরে আজ তিনি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।