লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের বাম্পার ফলন

আল আমিন মন্ডল (বগুড়া): বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও পেঁয়াজ উৎপাদনে এখনো স্বয়ংসম্পূর্ন হতে পারেনি। আমাদের এই দেশ প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে। একদিকে কৃষক পায়না ন্যায্য মূল্য অন্যদিকে ভোক্তা কে পেঁয়াজ কিনতে হয় চড়া মূল্যে।

বলা যায় উভয় সংকট। তাই এই সংকট নিরসনে একদিকে বাড়াতে হবে পেঁয়াজের চাষ, অন্যদিকে প্রয়োজন অধিক উৎপাদনশীল ভালো জাতের পেঁয়াজ বীজ। নওগাঁ জেলা আত্রাই উপজেলার চৌড় বাড়ী, শুটকিগাছা অঞ্চলে পেঁয়াজের বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করে দেখা গেছে লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি। স্থানীয় কৃষকদের মতে লাল তীর হাইব্রিড জাতের হলে ও দেখতে দেশী তাহেরপুরী পেঁয়াজের মতোই, আবার স্বাদেও দেশীয় পিয়াজের মতোই কড়া ঝাঁজ। তাই বাজারে চাহিদা ভালো।

দেশী জাতের পেঁয়াজের ফলন ৩৩ শতকে ৭০ মন কিন্ত লাল তীর হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজের ফলন ১৫০ মন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। তাই কৃষক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গত ১১/০৪/২০২২ ইং রোজ সোমবার চৌড় বাড়ী, শুটকিগাছা বাজার, আত্রাই, নওগাঁ-এ লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের উপর একটি সফল মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মাঠ দিবসে লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের ফলন দেখতে সরজমিনে আসেন শতাধিক স্থানীয় চাষীরা। লাল তীর সীড লিমিটেডের রাজশাহী রিজিওনাল ম্যানেজার সাইখুল আহসান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন।

উক্ত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন লাল তীর সীড লিমিটেডের ডিভিশনাল ম্যানেজার মোঃ শফিকুর রহমান । বিশেষ অতিথি ছিলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ লিংখন, ডিলার মোঃ আঃ খালেক, লাল তীরের টেরিটরী ম্যানেজার মোঃ ওমর আলী, মডেল কৃষক মো: মোফারুল, বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশের পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে এবং কৃষক ভাইদের অধিক মুনাফা অর্জনে লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের বীজ অনন্য অবদান রেখে চলেছে। তাই অধিক ফলনের নিশ্চয়তা প্রদান করে। লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজের বীজ সারা দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে উপস্থিত সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। সফল চাষী মোফারুল বলেন, লাল তীর কোম্পানীর সকল বীজ ভালো, সর্বশেষ পিয়াঁজের হাইব্রিড বীজ সরবরাহের কারনে আমরা অল্প জমিতে অধিক ফলন এবং বেশি মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।

এই কারনে লাল তীর সীড লিমিটেডের টপ ম্যানেজমেন্ট কে ধন্যবাদ জানান। সফল চাষী মোঃ মোফারুল বলেন সময় এবং চাহিদা মত আমরা যেন বীজ পেতে পারি সেদিকে সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য লাল তীর কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানান। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন পিয়াঁজ একটি অর্থকরী ফসল। আমরা পিয়াঁজ ফসল উৎপাদনে অনেক পিছিয়ে আছি।

লাল তীর যে হাইব্রিড পিয়াঁজের জাত নিয়ে এসেছে তা খুবই ভালো একটি জাত। আমার দেখা মতে এটির উৎপাদন বিঘা প্রতি ১৫০মন। চাষীরা এই জাতের পিয়াঁজ চাষ বাড়ালে পিয়াঁজের আমদানী নির্বরতা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরন করে বিদেশে রপ্তানী করার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি আশা করছি আগামী বছর আমার এরাকায় লাল তীর হাইব্রিড পিয়াঁজের চাষের জমির পরিমান বাড়বে।

লাল তীর সীড এর রিজিওনাল ম্যানেজার সাইখুল আহসান বলেন সব ধরনের সব্জীর হাইব্রিড বীজ উদ্ভাবন এবং সম্প্রাসারন করে থাকি। আমরা সব্জী বীজের পাশাপাশি হাইব্রিড ভ’ট্টা, ধান, গম, আলু বীজ রয়েছে। লাল তীর লাইভস্টক যেখানে গরু মহিষের জাত উন্নয়নে কাজ করছে এবং আমাদের বিভিন্ন বালাইনাশক রয়েছে।

আমরা প্রতিনিয়ত গবেষনা করে যাচ্চি বাংলাদেশের কৃষকদের হাতে নতুন নতুর উচ্চফলনশীল/ হাইব্রিড জাত পৌঁছে দেওয়ার জন্য। অনুষ্ঠানের সফল চাষী মো: মোফারুলকে কোম্পানীর পক্ষ থেকে পুরকৃত করা হয়। পরিশেষে অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি এই আয়োজনের জন্য লাল তীর কোম্পানীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।