সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। সভা শেষে দলীয় কার্যালয়ে হাঁটাচলা করতে অক্ষম ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার, গরিব মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন ও মানবভোজ বিতরণ করা হয়।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, যুগ্ম সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু, নগর মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে আমরা অনেক আগেই অর্থনৈতিক মুক্তি পেতাম। কিন্তু ঐ হায়েনার দল, পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তি থেকে বঞ্চিত করেছিলো, খন্দকার মুসতাক, জিয়া ও এরশাদের সামরিক শাসনে জনগণ অন্যায়, অত্যাচার ও জুলুমের শিকার হয়েছিলো। শুরু হয়েছিলো শোষণ ও বঞ্চনার অধ্যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা এবং গণতন্ত্রকে ধুলিসাৎ করেছিলো। বাঙালির শোষণ, বঞ্চনা থেকে মুক্তি, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছিলেন। ঠিক তেমনি তাঁর কন্যা জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলাদেশের সম্মান বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিকট তুলে ধরেন। এক সময় কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিডেল ক্যাস্ট্র বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে বলেছিলেন, “আমি হিমালয় দেখি নি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি।” ঠিক তেমনি আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সামনে দেখেন, নি তারা যদি নেত্রীকে সামনে থেকে দেখেন তারাও ঠিক এমনটাই বলবেন আমরা হিমালয় দেখি নি কিন্তু শেখ হাসিনাকে দেখেছি। শেখ হাসিনা আজকে শুধু বাংলাদেশের নয় সারা বিশ্বের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের অনেকগুলি ক্ষেত্র থাকে, অনেকগুলি মাত্রা থাকে, অনেকগুলি স্তর থাকে, সেই স্তরগুলির এমন কোন স্তর নেই যেখানে শেখ হাসিনার পৌঁছান নি।
ভাবতেও অবাক লাগে একজন মানুষের মধ্যে কত পরিমান মেধা, ক্ষুরধার বুদ্ধি ও চিন্তা ভাবনা থাকলে একটি মানুষ সবকিছু মোকাবিলা করতে পারে তার জীবন্ত দৃষ্টান্ত আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। এজন্যই তাঁকে বলা হয় “ক্রাইসিস মেকানিজম মাস্টার।” কারণ বাংলাদেশে যত সংকট সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক সংকট, বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদীদের চক্রান্ত, শুধু তাই নয় এই করোনাকালীন সংকটে দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিলো, সেই সংকটকে মোকাবিলা করে দেশকে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় দাঁড় করিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
এই ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে তাঁর জীবনের উপর নেমে আসে মৃত্যুঝুকি। তাঁকে হত্যার করতে ১৯ বার হামলা করা হয়েছিলো। পরম করুনাময়ের অশেষ রহমতে ও আপনাদের ভালোবাসায় তিনি আপনাদের মাঝে বারবার ফিরে এসেছেন। সামরিক স্বৈর শাসনের সময় স্বৈরশাসকরা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর কাছে ঋন চাইতে গেলে তারা ভাবতো ঋন দিবো কি না। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ সহ অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে ঋন দেওয়ার জন্য তোষামোদী করে আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভাবে ঋন নেব কি না।
এখানেই স্পষ্ট হয়ে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাসন ও জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার শাসনামল। তিনি সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের আহ্বানের একটি প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তথা বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস দলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে জানতে হবে সেই লক্ষ্যে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের মাঝে পাঠচক্রের আয়োজনের ব্যাপারে তার ইতিবাচক মতামত ব্যক্ত করেন এবং অচিরেই সেই কার্যক্রম শুরু করা হবে। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সুস্থ. সুন্দর ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি।
মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, আজ এক মহিয়সী নারীর জন্মদিন, যিনি নিজের আলোয় আলোকিত এবং তাঁর কর্মের মধ্যে দিয়ে তিনি নিজেকে উদ্ভাসিত করেছেন ও জাতি হিসেবে আমাদের বর্হিবিশ্বের কাছে সম্মানের স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি আমাদের প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা। আজকের টুঙ্গিপাড়ার সেই নিভৃত গ্রামে জন্ম নিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্যে দিয়ে নিজেকে বিকশিত করেছিলেন, ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, ছাত্রজীবনেই তাঁর নেতৃত্বের গুন লক্ষ্য করি ইডেন কলেজের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে।
পিতার সাহচর্যে রাজনীতির প্রতিটি শাখায় জ্ঞান আহরণ করেন তিনি। আজকে যে আমরা বঙ্গবন্ধুর অসামপ্ত আত্মজীবনীটি পড়ছি, এটাও তাঁরই সাহসী পদক্ষেপের কারণেই পেয়েছি। কারণ একাত্তরের ২৫ শে মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা গ্রেফতারের পরে ধানমন্ডীর ৩২নম্বর বাসভবন তাদের দখলে নেয়। সেই সময় তিনি তাঁর মায়ের নির্দেশে ভাইবোনদের লেখাপড়ার বই আনতে যাওয়ার অজুহাতে বঙ্গবন্ধুর সহস্তে লিখিত ডায়েরীগুলি উদ্ধার করে আনেন, তা না হলে হয়ত বা পাকিস্তানীরা সেদিন অমূল্য সম্পদ অসামপ্ত আত্মজীবনীর পান্ডুলিপিগুলো ধ্বংস করে দিতো।
তিনি উপস্থিত নেতাকর্মী বিশেষ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও দেশরতœ শেখ হাসিনা-কে নিয়ে যে বইগুলো প্রকাশ হয়েছে সেই বইগুলো পড়ার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, রাজনীতি করতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, নেত্রী শেখ হাসিনাকে জানতে হবে, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে হবে। সভার সভাপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীর জন্য একটি পাঠচক্রের আয়োজন করে নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক ভাবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। যাতে করে বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও পড়া-মহল্লার বৈঠক-আড্ডাতে বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দিয়ে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন-কর্মসূচী জনগণের মাঝে তুলে ধরতে পারে।
তিনি আরো বলেন, রাজনীতিতে কি পেলাম, আর কি পেলাম না এই হিসাব করে কারও রাজনীতি করার দারকার নেই। রাজনীতি করে আপনি দেশকে কি দিলেন, সমাজকে কি দিলেন, নেত্রী শেখ হাসিনাকে কি দিলেন, দলকে কি দিলেন- এই হিসাব করে দলে মনোনিবেশ করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, আমি বারবার একটিই কথায় বলি আমাদের প্রিয় নেত্রী স্বপ্ন দেখেন উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের, যে স্বপ্ন বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে তিনি দেখান এবং তা বাস্তবায়ন করেন। পরম করুনাময় যেন আমাদের প্রিয় নেত্রীর দীর্ঘায়ু, সুস্থ, সুন্দর ও কল্যানময় জীবন দান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আসাদুজ্জামান আজাদ, কৃষি সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন সম্পাদক অ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যান সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, ধর্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক রবিউল আলম রবি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক শ্যাম দত্ত, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, শ্রম সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, সদস্য মোশফিকুর রহমান হাসনাত, এনামুল হক কলিন্স, শাহাব উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন খান, অ্যাড. শামসুন্নাহার মুক্তি, হাফিজুর রহমান বাবু, মন্তাজ হোসেন, মজিবুর রহমান, বাদশা শেখ, আলিমুল হাসান সজল, জয়নাল আবেদীন চাঁদ, ইউনুস আলী, মোখলেশুর রহমান কচি, মাসুদ আহম্মেদ, কে.এম জুয়েল জামান, আশীষ তরু দে সরকার অর্পণ, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, মতিহার থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালমা রেজা, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি অ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নীলুফার ইয়াস নিলু, নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ সহ নেতৃবৃন্দ।