করোনাভাইরাস দ্বিতীয়বার হওয়া বিরল, তবে বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি : গবেষণা

0 ৪৫৯

নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর সিংহভাগ মানুষের অন্তত ছয় মাস পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তবে, কম বয়সীদের তুলনায় বয়োঃবৃদ্ধদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, ইউরোপের দেশ ডেনমার্কে প্রথম ও দ্বিতীয় দফা করোনার ঢেউয়ের সময় যারা আক্রান্ত হয়েছিল, তাদের মধ্য থেকে কেবল শূন্য দশমিক ৬৫ শতাংশ দ্বিতীয়বার ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়।

 

তবে, গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা একবার করোনায় আক্রান্ত হলে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে কেবল ৪৭ শতাংশ সুরক্ষা পান। অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের ক্ষেত্রে সুরক্ষার এই হার ৮০ শতাংশ।

ডেনমার্কের স্ট্যাটেন্স সেরাম ইনস্টিটিউটের স্টিন এথেলবার্গ বলেন : ‘অন্য অনেকগুলো গবেষণায় যা ধারণা করা হয়েছিল,  আমাদের গবেষণায় সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, অপেক্ষাকৃত কমবয়সী, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী লোকজনের মধ্যে কোভিড-১৯-এ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল। তবে, বয়স্কদের ক্ষেত্রে এতে (করোনায়) পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার বড় ধরনের ঝুঁকি থাকে।’

 

‘যেহেতু বয়স্করা রোগের গুরুতর উপসর্গে ভুগে মারা যেতে পারেন, আমাদের গবেষণায় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অতিমারির সময় বয়স্কদের সুরক্ষিত রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ’, যোগ করেন স্টিন এথেলবার্গ।

 

গবেষণায় একবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ছয় মাস পর্যন্ত পুনরায় আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষায় কোনো কমতি হওয়ার প্রমাণ মেলেনি। তবে গবেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের ক্ষেত্রে সুরক্ষার মাত্রায় হেরফের হতে পারে কি না, সে বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

 

ডেনমার্কে ২০২০ সালে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৬৯ শতাংশ বা ৪০ লাখ মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় যেসব তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তা এসব পরীক্ষায় থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে।

 

গবেষণায় পাওয়া তথ্য ও ফলাফলের বিষয়ে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের দুই অধ্যাপক রোজমেরি বয়টন ও ড্যানি অলটম্যান বলেন, পূর্বের গবেষণাগুলোর তুলনায় এই গবেষণার ফল ‘বেশি উদ্বেগজনক’।

 

ল্যানসেটে প্রকাশিত মন্তব্যে রোজমেরি বয়টন ও ড্যানি অলটম্যান বলেন, ‘(গবেষণায় প্রকাশিত) এসব তথ্য এটাই প্রমাণ করে— যদি প্রমাণের প্রয়োজন পড়ে—করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার যে আশা করা হচ্ছিল, তা হয়তো আমাদের সাধ্যের মধ্যে নেই। এতে এটাও প্রমাণ হয় যে, উচ্চ মাত্রায় কার্যকরী টিকার বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচিই দীর্ঘস্থায়ী সমাধান।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.