কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে অভৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে ৬ গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ

0 ৪৮৮

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মূখে পড়েছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী বসতঘর। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন রমরমা ব্যবসা চললেও এ ব্যাপারে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম এবং সোনাভরি নদীতে সারি বদ্ধ ভাবে প্রায় ৩০টি ড্রেজার মেশিন নদীতে বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীরা। বসত ভিটা, রাস্তা, ব্লক তৈরি, স্কুল মাঠ ভরাটসহ ট্রাক্টর দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে এসব বালু। এতে উপজেলার অনেক নদীতে অসময়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

 

নদীর তীরবর্তী মোহনগঞ্জ, চর নেওয়াজী, বাউল পাড়া, বালিয়ামারী, রাজিবপুর মুন্সিপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে হুমকির মুখে। প্রশাসনিকভাবে বার বার নিষেধ করা সত্বেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধুমছে চালাচ্ছে বালুর ব্যবসা। অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধের জন্য দফায় দফায় রাজিবপুর উপজেলা ভুমি কমিশনার, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না ভূক্তভোগিরা।

মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ড্রেজার মেশিনের মালিক শামীম হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আব্দুল হাই সরকার আমাকে অনুমোতি দিয়েছেন এবং তা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে দিয়েছেন। ওই এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, উজ্জল হোসেন নামের এক ড্রেজার মেশিন মালিক ডাকাত দলের সদস্য। কেউ ড্রেজার সম্পর্কে কথা বলতে গেলে ডাকাতের ভয় দেখায়।

এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আব্দুল হাই সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে আমি উদ্বোধন করি নাই। তবে আমার একটি ড্রেজার মেশিন আছে যা সরকারী রাস্তার কাজে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক তৈরির কাজের জন্য বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

রাজিবপুর উপজেলা কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস অতি: জানান, আমি ড্রেজার মেশিন চালানোর কোনও অনুমতি দেইনি। গত ৩ জানুয়ারী মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা খালেকুজ্জামানকে পাঠিয়ে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করিয়েছি। কাজের চাপে ওই এলাকায় যাওয়া হয় নাই। তবে আমি দ্রুত পদক্ষেপ নেব।

গত ২ জানুয়ারী কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম নদী শাসনের কাজ পরিদর্শনে এসে কয়েকটি ড্রেজার মেশিনের কিছু মালামাল জব্দ করে নিয়ে সব ড্রেজার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চলে গেলে আবারও চালু করা হয় ওই সব ড্রেজার মেশিন। এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিককে জানান, কোন ড্রেজার মেশিনের অনুমতি আমার দেয়া নাই। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ মেশিন চালালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.