বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে শেষ মূহূর্তে জমে উঠেছে ১৬টি কোরবানী পশুর হাট। জেলার হাটগুলোতে ব্যাপকসংখ্যক পশুর আমদানী থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ কোরবানী দিতে কিনছেন তাদের পছন্দ মত গরু। তবে ভারতীয় গরু না আসায় বেশী দাম পাওয়ায় খুশি বিক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ গত বছরে চেয়ে এবার দাম বেশি।
জেলার কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে জানাগেছে, কয়েকদিন পর ঈদ যেন সবার মাঝে খুশির বন্যা। আর এ ঈদে গরু কোরবানী দিতে গোপালগঞ্জের পশুর হাটে ভীড় করছেন নানা বয়সের মানুষ। এবছর জেলায় ১৬টি কোরবানীর পশুর হাট বসেছে। এসব হাটগুলো জমাতে এবছর ঔধষ ছাড়াই দেশীয় খাবারের মধ্যমে জেলায় ২৮ হাজার গরু ও সাড়ে ৪ হাজার ছাগল মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জেলার বাইরের গরুর আমদানীও বেশ ভালো।
এবছর এখন পর্যন্ত হাটগুলো ভারতীয় গরু দখল না করায় দেশী গরুর চাহিদ রয়েছে বেশী। এবছর হাটগুলোতে সবোর্চ্চ ২ লাখ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত গরুর দাম উঠেছে। যে পরিমান গরু-ছাগল গোপালগঞ্জে মোটাতাজা করা হয়েছে তা বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। চাঁদরাত্র পর্যন্ত চলবে এ বেচাকেনা।
এদিকে, ভারতীয় গরু না আসায় স্থানীয় গরুর উপরই ভরসা করতে হচ্ছে ক্রেতাদেরকে। হাটে ঘুরে ফিরে দর-দাম করে গরু কিনলেও গত বছর থেকে এবছর গরুর দাম বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তবে শেষ মুহুর্তে গরুর দাম কমবে এমন অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকেই। তবে দাম বেশী এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্রেতারা জানান, দেশী গরু হলেও দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। ভারতীয় গরু না আসায় এবছর লাভের আশা করছেন বিক্রেতারা।
জেলা পশুসম্পদ অফিস সুত্রে জানাগেছে, গোপালগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন ট্রাকে করে এসব গরু বিক্রির জন্য নেওয়া হচ্ছে দেশের বড় বড় পশুহাট গুলোতে। দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যাপারীরা গোপালগঞ্জের হাট বাজার থেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এ বছর পশু খাদ্যের দাম বেশি থাকায় গরু পালনে খরচ পড়েছে বেশি।
জেলা শহরের একরামুল কবীর, আকবর হোসেন, রইস সিকদার, আবু হানিফ সিকদার জানান, কয়েকটি হাট ঘুরে দেখেছি। হাটগুলোতে ভারতীয় গরু না আসায় দেশী গরুর আমদানী বেশী। গত বছর থেকে এ বছর গরুর দাম বেশী। তারপরেও হাটে ঘুরে ফিরে দর-দাম করে কোরবানীর জন্য গরু কিনব।
গরু ব্যবসায়ী একরাম শেখ, তনজিল মিয়া জানান, এ বছর ভারতীয় গরু বাজারে আসেনি। তাই দেশী গরুর চাহিদা বেশি। প্রাকৃতিক ঘাস ও খড় খাইয়ে গরু মোটা-তাজা করেছি। শেষ মূহূর্তে ভারতীয় গরু না আসলে লাভবান হব।
গরুর হাট ইজারাদার সুজন শেখ জানান, হাটগুলোতে জাল টাকা ছড়ানোসহ কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ও পৌর মেয়র সব সময় দেখভাল করছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতাউর রহমান চৌধুরী জানান, এবছর জেলার ১৬টি পশুর হাটের জন্য ৮টি ভ্যাটেনারী মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। হাটে বিক্রির জন্য গরু পরীক্ষা-নীরীক্ষা করছে টিমগুলো। যাতে কোন রুগ্ন ও রোগাক্রান্ত গরু বিক্রি না হয়।