চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৫টি দর্শনীয় স্থান
ইতিহাস ডেস্ক : প্রিয় জনদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এমন কিছু চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্শনীয় স্থান সমূহ:
১। বাবু ডাইং, ঝিলিম ইউনিয়ন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর।
উঁচু-নিচু একাধিক টিলা, ঝর্ণা ও প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত পর্যটক এখানে আসেন।
২। মহানন্দা নদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর।
মহানন্দা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য ও মহানন্দা ব্রিজ দেখার জন্য প্রতিদিনই অনেক দর্শনার্থী আসেন এখানে।
৩। ২য় মহানন্দা সেতু (শেখ হাসিনা সেতু), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর।
মহানন্দা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য ও নতুন ২য় মহানন্দা সেতু (শেখ হাসিনা সেতু) দেখার জন্য প্রতিদিনই অনেক দর্শনার্থী আসেন এখানে।
৪। ঐতিহাসিক আলী শাহপুর মসজিদ, আলীশাহপুর, ফতেপুর, নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউয়িনের ২নং ওয়ার্ডের আলীশাহপুর গ্রামে প্রায় ৫’শত বছরের পুরনো একটি প্রাচীন মসজিদ কালের সাক্ষী হিসাবে আজোও দাঁড়িয়ে আছে। কিন্ত এ ঐতিহাসিক মসজিদটির কথা নাচোলের অধিকাংশ মানুষই জানেনা।
৫। ষাঁড়বুরুজ, গোমস্তাপুর, রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোমস্তাপুরের ষাঁড়বুরুজ প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত। এ উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রহনপুর ও এর আশেপাশে রয়েছে অগনিত প্রাচীন ঐতিহ্যের নির্দশন। রাজা লক্ষন সেনের আমলে রহনপুর বানিজ্য নগরী হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
৬। ছোট সোনা মসজিদ , শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
ছোট সোনামসজিদ ‘সুলতানি স্থাপত্যের রত্ন’ বলে আখ্যাত। শিলালিপিতে নির্মানের সঠিক তারিখ সম্বলিত অক্ষরগুলি মুছে গেছে। তবে এতে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এর নামের উল্লেখ থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, মসজিদটি তার রাজত্বকালের (১৪৯৪-১৫১৯) কোন এক সময় নির্মিত।
৭। দারাসবাড়ি মসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
এর আয়তন ৯৯ ফুট ৫ ইঞ্চি ও ৩৪ ফুট ৯ ইঞ্চি। উপরে ৯টি গম্বুজের চিহ্নাবশেষ রয়েছে। এখন শুধু মসজিদটির ধ্বংসাবশেষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। দারসবাড়ি মসজিদের বাহির এবং অভ্যন্তর দেয়ালে টেরাকোটা খচিত। আশপাশের যে ক’টি মসজিদ আছে সে সবের চেয়ে এ মসজিদটি অধিকতর সুন্দর।
৮। দারাস বাড়ি মাদ্রাসা ও চল্লিশঘর, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
একটি আরবি শিলালিপি অনুসারে ৮৮৪ হিজরি অনুযায়ী ১৪৭৯ সালে সুলতান শামসউদ্দিন ইউসুফ শাহের রাজত্বকালে তারই নির্দেশে মসজিদটি নির্মিত হয়।
৯। খঞ্জনদীঘির মসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
দারসবাড়ী মসজিদের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত বল্লাল সেন খননকৃত বালিয়া দীঘির দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে পূর্বদিকেকিছুদূর গিয়ে চোখে পড়ে খঞ্জনদীঘির মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। খঞ্চনদীঘির মসজিদটি অনেকের নিকট খনিয়াদীঘির মসজিদ নামে পরিচিত। আবার অনেকে একে রাজবিবি মসজিদও বলে থাকেন।
১০। চামচিকা মসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
দারসবাড়ী মসজিদের মতই পোড়ামাটি ইট ও কারুকার্য খচিত এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর দেয়ালের পরিধি এত মোটা যে চৈত্র মাসের প্রচন্ড গরমে এর ভিতরে শীতল পরিবেশ বিদ্যমান থাকে। এর মূল গম্বুজটি অতি সুন্দর। এই মসজিদের পূর্বে ৬০ বিঘা আয়তনের খঞ্জন দিঘী নামে একটি বড় দিঘী রয়েছে।
১১। তাহখানা কমপ্লেক্স, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
তাহখানা পারসিয়ান শব্দ যার আভিধানিক অর্থ ঠান্ডা ভবন বা প্রাসাদ। গৌড়-লখনৌতির ফিরোজপুর এলাকায় একটি বড় পুকুরের পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ভবন কাঠামোটি ঐতিহ্যগতভাবে তাহখানা নামে পরিচিত।সমাধিটি সম্ভবত দরবেশের (মৃত্যু ১৬৬৪ অথবা ১৬৬৯ খ্রিঃ) অন্তিম শয়নের জন্য পূর্বেই নির্মিত হয়েছিল।
১২। তিন গম্বুজ মসজিদ , শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
শিবগঞ্জ উপজেলা ফিরোজপুরস্থিত শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ (রহঃ) প্রতিষ্ঠিত তদীয় সমাধি সংশ্লিষ্ট তিন গম্বুজ মসজিদটি মোঘল যুগের একটি বিশিষ্ট কীর্তি। এতে ৩টি প্রবেশ পথ এবং ভেতরে ৩টি মেহরাব রয়েছে।
১৩। শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ (রহঃ) ও তাঁর মাজার, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
হযরত শাহ নেয়ামতউল্লাহর মাজার শরীফ শিবগঞ্জ উপজেলার তোহাখানায় অবস্থিত। বার দরজা বিশিষ্ট চতুস্কোনায়তন তার সমাধিটি। প্রত্যেক পাশে ২/৩ টি করে দরজা আছে। এখানে যে লিপিটি আছে তা হোসেন শাহী যুগের একটি আরবী লিপি।
১৪। কোতোয়ালী দরওয়াজা, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
নগর পুলিশের ফারসি প্রতিশব্দ ‘কোতওয়াল’ এর অনুকরণে নামকরণ করা হয়েছে। এ নগরপুলিশ (কোতওয়াল) গৌড় নগরীর দক্ষিণ দেয়াল রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। প্রাচীন গৌড়ের রাজধানীতে প্রবেশ করতে হলে দক্ষিণ ‘নগর উপকন্ঠে’র অধিবাসীদের ছিল।
১৫। ধনাইচকের মসজিদ, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
খঞ্জনদীঘি মসজিদের অদূরেই রয়েছে আরও একটি প্রাচীন মসজিদ। এই মসজিদটির নাম ধনাইচকের মসজিদ। এটিও ১৪ শতকে নির্মিত হয়েছে। এর দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন কারুকার্য। সূত্র : চাপাই এক্সপ্রেস।