চাকরী ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা মাহফিজুর

১০৪

মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য মাহফিজুর রহমান। সাপাহার উপজেলার ইসলাম পুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। ১৯৯৭ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। কঙ্গোতে সেনা সসদস্য হিসেবে দয়িত্ব পালন করেন দেড় বছর। পরে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে স্বেচ্ছায় চাকরী ছেড়ে দেন। তারপর ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা। গড়ে তোলেন মাহফুজ মন্ডল এগ্রোফার্ম।

রোববার (২৬জুন) সরেজমিনে সমন্বিত কৃষি খামারে গিয়ে জানা যায়, কি নেই মাহফুজ মন্ডল এগ্রো ফার্মে!চোখ ঘোরাতেই
চারিদেকে চোখে পড়ে সবুজের সমারোহ। শুধু কি আম- বরই! পুঁইশাক, ঢেঁড়শ, স্কোয়াশ, মিষ্টিকুমড়া, শশা সহ বিভিন্ন সবজির গাছে ছেয়ে গেছে। যেন পা ফেলবার জায়গা নেই! নিজস্ব গভীর নলকূপ থাকায় পানির কোন অভাব নেই। যার কারনে সব ধরণের ফসল হয়ে থাকে এই কৃষি খামারে। শুধু কি তাই! মাহফিজুর রহমান নিজেই মাল্টা, বরই, আম ইত্যদির গ্র্যাফটিং করে থাকেন। এছাড়াও সৌদি খেজুরের বীজ সংগ্রহ করে চারা উৎপাদন করে নিজেই বাগান তৈরী করে বলে জানান মাহফিজুর।

মাহফিজুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেবার পরে আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকি। দেখতে থাকি  উদ্যোক্তাদের নানাবিধ কর্ম। তাদের দেখে উৎসাহিত হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নিজের কিছু জমি ও কিছু লিজ নিয়ে শুরু করি আম বাগান। প্রথম পর্যায়ে ১৪ বিঘা জমিতে আম গাছ রোপন করি। পরে বিভিন্ন অভিজ্ঞজনদের সাথে পরামর্শ নিয়ে আম বাগানের মধ্যেই বিভিন্ন ফসল চাষ আরম্ভ করি। যাতে গড়ে ওঠে সমন্বিত একটি বাগান। এতে করে আরো দ্বিগুন লাভজন হয়ে ওঠে আমার প্রকল্প। পরবর্তী সময়ে আরো বেশ কিছু জমি লিজ নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ধরণের ফলজ এবং শাক-সবজি রোপন করি। বর্তমানে আমার ২৭ বিঘা জমির প্রজেক্ট।

তিনি আরো বলেন, আমার সমন্বিত বাগানে রয়েছে আম, মাল্টা, বরই, মাল্টা, কমলা, লেবু, না প্রকার শাক সবজি, সৌদি খেজুর, স্কোয়াশ, ওটিসি-৩ বা বারোমাসি সজনে, বার্লি, জামরুল ইত্য্যাদি। এছাড়াও দেশি আমের পাশাপাশি আমার বাগানে বিদেশী জাতেরও আম রয়েছে। যেমন, আ¤্রপালি, বারি-৪, কিউজাই, পালমা, ব্যানানা, মিয়াজাকি জাতের আম আমার সমন্বিত বাগানে রয়েছে।

কৃষিখাতেই কেন তিনি ঝুঁকলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,“ আমি মূলতঃ কৃষকের সন্তান। সেজন্য যতই বাইরে থাকি বা
চাকরী করি কৃষি আমাদের টানে। এজন্য অনেক উদ্যেক্তার সাথে পরামর্শ করে আমি এ ধরণের উদ্যোগ গ্রহন করেছি।
শুরুর দিকে লভ্যাংশ কম হলেও বর্তমানে প্রতি বছরে “মাহফুজ মন্ডল এগ্রোফার্ম” হতে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে।
বর্তমানে আমের মৌসুম হওয়ায় বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন মাহফিজুর রহমান। তার ফার্মে কর্মসংস্থান হয়েছে ১০/১২ জন বেকার যুবকের। এছাড়াও মৌসুম অনুযায়ী প্রায় ৩০/৪০জন লোকের কর্ম সংস্থান হয়ে থাকে এই ফার্মে।

মাহফিজুর রহমান জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর হতে সঠিক তদারকি ও পরামর্শ প্রদান করা হলে আরো উপকৃত হতে পারতাম। কৃষি অফিসের কোন অফিসার আমার বাগানে আসেনা বললেই চলে। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছেন আমাদের অফিস থেকে সকল ধরণের সহায়তা অব্যহত রয়েছে।

Comments are closed.