প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সারাদেশে একযোগে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পালিত হবে। রাজশাহী মহানগরীতে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে অবহিতকরণ ও কর্মপরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরভবনের সরিৎ দত্ত গুপ্ত সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফ.এ.এম আঞ্জুমান আরা বেগম।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোঃ মশিউর রহমান। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, শিশুদের রাতকানা, হাম, দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া, মারাত্মক অপুষ্টি থেকে রক্ষা করতে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন পালন করছে সরকার। এ দিবসে ৬-১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে ১টি নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও ১২-৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আগামী প্রজন্মকে সুস্থ সবলভাবে বেড়ে উঠতে সরকারের এ কার্যক্রম সফল করতে হবে।
কোন শিশু যেন এ কার্যক্রমের আওতায় বহির্ভূত না থাকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, মাননীয় মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যসেবায় সারাদেশে রোল মডেল রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের এই অর্জন আমরা ধরে রাখতে চাই।
সভায় রাজশাহীতে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বিষয়ে সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করা হয়। ভিটামিন এ খাওয়ানোর গুরুত্বারোপ করে জানানো হয়, ভিটামিন ‘এ’ দেহের স্বাভাবিক বৃৃদ্ধিতে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। জন্মের পর পরই নবজাতককে শালদুধসহ মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করুন। জন্মের পর প্রথম ৬ মাস (১৮০ দিন) শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো।
পানি, মধু, চিনি বা মিসরির পানি ইত্যাদি খাওয়ানো যাবে না। শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমান মত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণে গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ খাবার (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা) ও উদ্ভিজ খাবার (হলুদ ফলমূল ও রঙিন শাক-সব্জি) খেতে দিন। জেরোফথ্যালামিয়া (রাতকানা ও বিটট্স স্পট), দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া, হাম ও মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সভায় জানানো হয়, জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৬-১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এ ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী ৮২৭৪ জন ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৫৫৯৪৮ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীতে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়নে ৩৮৪টি কেন্দ্রে ৭৬৮জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ২ জন করে স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্র সকাল ৮টা হতে ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা, মাইকিং, মসজিদে জুম্মার নামাজের পূর্বে মসজিদের ইমাম/খতিবের মাধ্যমে মুসল্লিদের অবহিতকরণ এবং অন্যান্য উপাসনালনের মাধ্যমেও একই বার্তা প্রেরণ করা হচ্ছে।
সভায় বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক হাসিনা মমতাজ, বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর উপ-আঞ্চলিক পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল হাসান, পরিবার পরিকল্পনা সহকারী পরিচালক খন্দকার আরিফুজ্জামান।
সভায় রাসিকের ভ্যাটেরিনারী সার্জন ডাঃ ফরাদ উদ্দিন, ডা. তারিকুল হাসান বনি, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা নাজমা খাতুন, ড্যামের ডা: সেতারুন নাহার, নারী মৈত্রীর প্রজেক্ট ম্যানেজার মনিরুজ্জামান মোড়ল, আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের মনিটরিং অফিসার সহিদা বেগম, রাসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সঞ্চালনা করেন রাসিকের ফুড এন্ড স্যানিটেশন অফিসার শেখ আরিফুল হক।