টাঙ্গাইলে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনে জমির শ্রেণি পরিবর্তন

0 ১,৬৫৪

মু.জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার চরাঞ্চলে বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে। চলাচলের জন্য দুর্গম হওয়ায় প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে স্থানীয় এমপির নাম ভাঙিয়ে অন্তত এক ডজন ড্রেজার দিয়ে প্রকাশে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের বেড়ীপটল, চরহামজানি ও কদিম হামজানি গ্রামে এক ডজন বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু-মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। বাংলা ড্রেজার চালানোর ফলে ওইসব এলাকার নদীতীর ইতোমধ্যে ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। এছাড়া ধলেশ্বরী নদী প্রবাহ পরিবর্তিত হওয়ায় ভরাট হওয়া জমিতে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অবাধে মাটি উত্তোলন করায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পুনরায় ভয়াবহ ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ধলেশ্বরী নদীর বেড়ীপটল, চরহামজানি ও কদিম হামজানি মৌজার অংশ ভরাট হওয়ায় এলাকাবাসী তাদের পুরনো জমি ফিরে পেয়ে বেজায় খুশি। ওইসব জমিতে তারা নানা ফসলাদি উৎপাদন করতে পারছে। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি জমির মাঝে মাঝে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে বিশালাকার গর্তের সৃষ্টি করছে। এতে আশপাশের জমি ভেঙে পুনরায় নদীতে রূপ নিচ্ছে।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের চরদুর্গাপুর গ্রামের হাজী আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাসেলের নেতৃত্বে বেড়ীপটল, চরহামজানি ও কদিম হামজানি গ্রামের বিভিন্ন স্পটে স্থানীয় ইউসুফ, সোরহাব, কাওছার, ইলিয়াস, রায়হান, মনির, আনিছ ও হাফিজ উদ্দিন ১২টি বাংলা ড্রেজার বসিয়ে দিন-রাত বালু-মাটি উত্তোলন করছে। তারা এমপির লোক হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। যদি কেউ প্রতিবাদ করে তাহলে রাসেলের পরামর্শে বাড়িতে নিষিদ্ধ ফেন্সিডিল রেখে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়।
বেড়ীপটল গ্রামের খাদেমুল বলেন, ‘আমার বাড়ি ডা ধলেশ্বরী গিলে খাইছিল, জমি ও ফসল বিক্রি করে অনেক কষ্টে চার লাখ টাকা খরচ করে জেগে ওঠা চরে নতুন বাড়ি বানাইছি। বালুখেকোদের ড্রেজারের কারণে এই বাড়িডাও আবারও নদীর পেটে যাবে!’ প্রায় একই বক্তব্য চরহামজানির সামাদ, রাশিদা বেগম সহ অনেকের। তারা দুঃখ করে বলেন, ‘এমপিকে ভোট দেই, ভাল থাকার জন্য আর এখন সেই এমপির লোকরা আমাদের সর্বনাশ করছে’।
এ বিষয়ে হাজী আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাসেল জানান, তারা এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারির লোক। তারা কিছুটা সুবিধা পেতেই পারেন।
দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রামাণিক জানান, বাংলা ড্রেজার বসিয়ে কতিপয় লোক জমির শ্রেণি পরিবর্তণের পাশাপাশি এলাকা ধংস করে ফেলছে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন সমন্বয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম হলেও ড্রেজারের বিষয়ে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান।
স্থানীয় এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারি মহান জাতীয় সংসদের অধিবেশনে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজয় কুমার ঘোষ। সহকারী বার্তা সম্পাদক : এএস সুমন। কার্যালয়ঃ পুঠিয়া, রাজশাহী। মোবাইলঃ ০১৭১১-০০০২৯৬, ০১৭১৮-১২১২৪২, ই-মেইলঃ newsbdsangbad24@gmail.com/ newsrajshahipratidin@gmail.com