তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে গত দুদিনের ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার রোপা আমনের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলের জমি ও পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় শতধিক পরিবার। এদিকে শিবনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া উপজেলার তানোর পৌর এলাকাসহ কাঁমারগা ও চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের সিংহভাগ ফসলের জমি ও ঘর বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে।
এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সেসব এলাকায় কয়েক হাজার সাধারন মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন এখন পর্যন্ত সরকারী ভাবে কোন সাহায্য তাদের মাঝে বিতরন করা হয়নি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শওকাত আলী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায় অফিসের সহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক, পৌর মেয়র মিজানুর রহমান, কমারগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন ও চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সাথে দেখা করে তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত দুদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে শিবনদীর পানির ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং মুহুর্তের মধ্যে নিচু এলাকার রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে যায়। এতে কৃষকদের কষ্টের রোপনকৃত আমন ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে প্রায় শতাধিক পরিবার।
এনিয়ে তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান ওধানতোড় গ্রামের আশরাফুল ইসলাম জানান, এবার শ্রাবনের টানা দু’দিনের বর্ষণে ও উজান থেকে আসা পানিতে আমাদের নিচু এলাকার রোপা আমনের প্রায় ১০ বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সরকারী ভাবে তালিকা কিংবা কোন খোঁজ নেয়নি।
তানোর পৌর এলাকার হলদার পাড়ার পানিবন্দী দিপক ও ড্রেন পাড়ার ফরিদ সহ ১০-১৫ টি পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে বলেন,গত ৫ দিন থেকে আমরা পানিবন্দী হয়ে আছি। রান্না করার জায়গা না থাকায় হোটেল থেকে বাকি করে খাবার নিয়ে কোন মতে অর্ধহারে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। কেউ আমাদের সাহায্য সহযোগীতা করছেনা। তাই আমাদের দাবি সরকারের কাছে সরকার যেন আমাদের মত পানিবন্দ মানুষের পূনঃবাসনসহ ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া হোক।
তানোর পৌর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান জানান, আমি নিজে সোমবার সকাল থেকে পৌর এলাকার ঘুরে পানিবন্দী ও রোপা আমন ধানের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরে তালিকা তৈরি করছি। তাদের সরকারী সাহায্যের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করব।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, দু’দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পানিতে নিচু এলাকার রোপা আমন ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। তবে, কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা আমি জানাতে পারেননি। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করার কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শওকাত আলী বলেন, আমি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করার জন্য কৃষি অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি। এবং পানিবন্দী মানুষদের তালিকা করার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায় অফিসারকে বলা হয়েছে। পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্থদের প্রাথমিক তথ্য নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করা হবে।
Prev Post