![](https://bdsangbad24.com/wp-content/uploads/2023/02/received_1138438493515577-300x152.jpeg)
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কলমা ইউপির ভালুকা কান্দর গ্রামের মাটির রাস্তার দক্ষিন দিকে কিয়ামত আলীর মাটির বসত বাড়ি। ওই বাড়ি সংলগ্ন ফসলী জমি। জমিটির মালিক প্রভাষক আব্দুল লতিফ। গত বছর পুকুর খননের জন্য লতিফ ভেকু মেশিন নামান। কিন্তু প্রতিবেশি কিয়ামতসহ অনেকে বাধাঁ দিলে পুকুর খনন করতে পারেন নি। লতিফ কুড়িগ্রাম জেলার সরকারি কলেজের প্রভাষক। কাজের দায়িত্বে থাকা সাবেক মেম্বার সাইদ এসে উপস্থিত হয়ে বলেন, এটা সরকারী কাজ, এখান থেকে মাটি নিয়ে কাচা মাটির রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। দেড় কিলোমিটার রাস্তায় মাটি দেওয়া হচ্ছে। এমপির বিশেষ বরাদ্দের কাজ।
উপজেলা চেয়ারম্যানের অর্ডারে কাজ করছি। ফসলী জমি কেটে পুকুর বাড়ি হুমকিতে ফেলে এভাবে কাজ করা যায় নাকি জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এতকিছু বলতে পারবনা, কতটাকা বরাদ্দ সেটাও জানিনা, মাটি না পাওয়ার কারনে এখান থেকে মাটি নেওয়া হচ্ছে। তার সাথে কথা বলা অবস্থায় কিয়ামত আলী ও তার পরিবারের লোকজন এসে বলেন যেভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে আমার বাড়ি ভেঙ্গে যাবে। আমি গরীব অসহায়, পাড়ার ভিতরে অনেক উচুঁ ভিটা আছে, সেগুলো কাটা হলে কারো ক্ষতি হত না। তিনি এসব কথা বললে সাবেক মেম্বার সাইদ নানা ভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া শুরু করেন।
তিনি আরো বলেন, সমস্যার কথা বলতে গেলেও এভাবে হুমকি দিচ্ছে, সরকারী কাজ বাধাঁ দিলে মামলার ভয় দেখাচ্ছেন। গত বছর পুকুর খনন করার সময় অনেকে বাধাঁ দিয়েছিল, এজন্য খনন হয়নি। এবার সরকারী কাজের দোহায়ে পুকুর খনন করে আমার সর্বনাশ ডেকে আনছে।
গ্রামবাসীরা জানান, ওই জমিতে এর আগে একাধিকবার চেষ্টা করেও পুকুর করতে পারেন নি। ওই জমিতে পুকুর হলে কিয়ামত আলীর বাড়ি তো ভেঙ্গে যাবে এবং প্রচুর জলাশয়ের সৃষ্টি হবে। যেহেতু কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না। কিন্ত সরকারী কাজের দোহায়ে পুকুর খনন হচ্ছে। রাস্তা সংস্কারের দরকার আছে, তাই বলে ক্ষতি করে এটা হয়না। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ কৃষি জমি নষ্ট করা যাবে না। কারন বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতি। যার কারনে জমি ফাকাঁ রাখাও যাবে না। কিন্তু সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে এসব করা হচ্ছে।
এক মেম্বার নাম প্রকাশ না করে জানান, দেড় কিলোমিটার রাস্তার বিপরীতে বরাদ্দ ৬ লাখ টাকা। দেড়শো হেরো ট্রাক মাটির প্রয়োজন পড়বে। খননের জায়গা থেকে মাটি ফেলার রাস্তা কয়েক হাত দুরে। ট্রাকপ্রতি উর্ধ্বে ৪০০ টাকা করে হলে ১৫০ গাড়ি মাটির দাম আসে ৬০ হাজার টাকা। বাকি টাকার কি অবস্থা বুঝে নিতে হবে। সাইদ সাবেক মেম্বার ওই ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার সহিদুল আছেন। তিনিও আওয়ামীলীগ।
কিন্তু তাকে হেয় করে সাবেক মেম্বার কে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এমনকি কলমা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বর্ষিয়ান আওয়ামীলীগ নেতা খাদেমুন নবী বাবু চৌধূরীও অবহিত না। শুধু মাত্র একটি কারন সে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেন। অথচ তালন্দ ইউপির চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবুও স্বতন্ত্র, তাকে নিয়ে সবকাজ করা হচ্ছে, বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কলমার চেয়ারম্যান কে সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
লতিফের ০১৬৭২৪৪১৭১৮ মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১০০ বিঘাতে পুকুর করছি। তানোরে কত সাংবাদিক আছে, আর কত পত্রিকা বের হয়, আমি রংপুরে আছি তানোরে গিয়ে সাক্ষাতে কথা বলা হবে। আপনি কৃষি ফসলী জমিতে কিভাবে পুকুর কাটছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, বললাম তো দেখা করা হবে, আমাকে বিরক্ত করার প্রয়োজন নাই বলেও দম্ভক্তি প্রকাশ করেন।
কলমা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা খাদেমুন নবী বাবু চৌধূরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান কাজের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পিআইও প্রকৌশলী তারিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সরাসরি জানান, আমি কিছুই জানিনা। কত টাকা বরাদ্দ সাবেক মেম্বার কিভাবে কাজ করে, কৃষি জমি খনন করে পুকুর সেই মাটি দিয়ে কাজ করা যায় কিনা, বা বসতবাড়ি হুমকিতে ফেলে এভাবে কাজ হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান কার সমস্যা অফিসে আসলে ব্যবস্থা হবে, আপনি কিছুই জানেন না তাহলে কিভাবে ব্যবস্থা হবে প্রশ্ন করা হলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, ওই জমি ছাড়া নাকি মাটি পাওয়া যাবে না। আর উন্নয়ন কাজ তো বন্ধ রাখা যাবে না। তারপর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে যাতে বসতবাড়ির কোন ক্ষতি না হয়।