শাহজাহান শাজু. নিয়ামতপুর-নওগাঁ : নওগাঁর নিয়ামতপুরের গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল আমীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৫ ডিসেম্বর ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্েযর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে ১ মাসের মধ্যে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন বাহাদুরপুর ইউ,পির সদস্য ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ময়েজ উদ্দীন আহমেদ, শিক্ষক প্রতিনিধি লক্ষী রাণী ও অভিভাবক সদস্য নয়ন।
ছাত্রীর লিখি অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, অভিযোগকারী ছাত্রীর বাবা প্রায় দেড় মাস পুর্বে মৃত্যুবরন করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে ১ ভাই ৪ বৎসর পুর্বে মারা যান, অপর ভাই ভারতের কারাগারে বর্তমানে আটক রয়েছে। অর্থাৎ ছাত্রীর বাড়ি পুরুষ মানুষ শুন্য। মা ফিরোজা আর ভাবী তারামন এই ৩ জনের তাদের সংসার। সে গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী।
দরিদ্র মেধাবী এ ছাত্রীর এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন খোঁজ খবরের বাহানায় পিতৃতুল্য এই শিক্ষকের কুনজর পড়ে তার সন্তান তুল্য ছাএীটির উপর। তার দারিদ্র্যতা ও বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকার সুযোগ নিয়ে শিক্ষক নূরুল আমীন মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে কূ-প্রস্তাব দিতে থাকেন এমনকি লেখ-পড়ার খোঁজ খবর নেয়ার বাহানায় রাএিবেলাও তার বাড়িতে যান।
ছাত্রীটি এসব নিরবে সহ্য সহ্য করতে করতে এক পর্যায়ে অধৈর্য্য হয়ে বিষয়টি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিকে জানান এবং এর প্রতিকার চান। গত ৪ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে তার সহপাঠী ও স্থানীয় ল্কোজনরা বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করে এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বাড়ি ঘেরাও করে । এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিটির গত সোমবারের জরুরী সভায় ছাত্রীটির অভিযোগ প্রমানিত হলে প্রধান শিক্ষক নূরুল আমীনকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাহাদুরপুর ইউ,পি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের কাছে মুঠো ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ছাত্রীটির অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, “ এ ঘটনায় ছাত্রীটি তার নিকট প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটির জরুরী সভা আহবান করেন তিনি। সভায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল আমীনকে কিিটর সিদ্ধান্তে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এর অনুলিপি উপজেলা শিক্ষা অফিসে দেয়া হয়েছে”।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী মৃধা জানান, “বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি বিষয়টি লিখিতভাবে তাঁকে জানিয়েছেন। তদন্তের ভিত্তিতে অভিযোগের প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেন তিনি”।
নিয়ামতপুর থানার অফিসার্স ইন চার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম খাঁনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের সাথে দেখা করে ঘটনার সত্যতা পান তিনি এবং লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাননি বলেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেন তিনি”।
Next Post