পিতা মাতার নিষেধ সত্বেও তাবলীগ জামাতে যাওয়া যাবে কী?

0 ৪৮৮

ধর্ম ডেস্ক: প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম।

আমি একটা ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। দেশের বর্তমান অবস্থা আপনারা অবগত আছেন আশা করি।

কিছুদিন পর আমাদের ভার্সিটি অফ হবে। তিন সপ্তাহ বন্ধ। আমার আব্বা আম্মা তাবলীগে যেতে নিষেধ করেছেন এবং অনেক অনুরোধ করেছেন। তারা বলেছেন দেশের অবস্থা ভালো হলে পরে জামাতে যেতে এবং খুব কড়াভাবে নিষেধ করেছেন।

এখন আমার কী করণীয়? আব্বা আম্মার আদেশ না মেনে জামাতে যাবো? যদি যাই তাহলে কি আমি পিতামাতার অবাধ্য সন্তান হিসেবে গণ্য হবো? হাদীস এবং কুরআনে পিতামাতার অবাধ্য সন্তানেরতো অনেক কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ আছে।

এখন আমি কি করবো? বুঝতেছি না। দয়া করে তাড়াতাড়ি জানালে খুব ভাল হয়।

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

উত্তর: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি বাবা মা অসুস্থ্য হন বা খিদমাতের মুখাপেক্ষী হন, তাহলে তাদের অনুমতি ব্যতীত তাবলীগে যাওয়া জায়েজ নয়। আর যদি খিদমাতের মুখাপেক্ষী নন, তাবলীগের সফর ছাড়া অন্যত্র বেড়াতে যেতে নিষেধ না করে, কিন্তু দ্বীনের সমঝ না হবার কারণে তাবলীগে যেতে বাঁধা প্রদান করে থাকেন, তাহলে তাদের অনুমতি না হলেও তাবলীগে দ্বীন শিখার নিয়তে যাওয়া জায়েজ আছে।

আর দেশের অবস্থা এতোটা খারাপ হয়নি যে, তাবলীগে গেলে কোনো সমস্যা হবে। সুতরাং দেশের অবস্থা খারাপ হবার অযুহাতে দ্বীন শিখার জন্য তাবলীগে যেতে বাঁধা দেয়া উচিত নয়। সেই হিসেবে যদি আপনার পিতা মাতার দ্বীন সম্পর্কে মোহাব্বত না থাকার কারণে এমনটি করে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য অনুমতি না পেলেও তাবলীগে যাওয়া জায়েজ আছে।

আর যদি তাদের কোনো প্রয়োজনে আপনাকে যেতে বাঁধা প্রদান করে থাকে, তাহলে যাওয়া যাবে না। [আপ কি মাসায়িল আওর উনকা হল-৮/১৯০-১৯১]

عن عبد الله بن عمرو رضى الله عنهما قال: جاء رجل إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: جئت أبايعك على الهجرة، وتركت أبوى يبكيان، قال: ارجع، فاضحكهما كما أبكيهما (سنن ابى داود-2/342، رقم-5228، سنن النسائى-2/44، رقم-4163، سنن ابن ماجه-2/200، رقم-2782)

عن عبد الله بن عمرو رضى الله عنهما قال: جاء رجل إلى النبى صلى الله عليه وسلم فقال: يا رسول الله! أجاهد؟ قال ألك أبوان؟ قال نعم، قال: ففيهما فجاهد (سنن ابى داود-2/342، رقم-2529، صحيح البخارى-2/883، رقم-3004، صحيح مسلم-2/313، رقم-2549، سنن الترمذى-2/296، رقم-1671، سنن النسائى-2/44، رقم-3103)

وفي الحديث فضل بر الوالدين، وتعظيم حقهما، وكثرة الثواب على برهما، ومطابقة الحديث بالباب بأنه استأذن في الهجرة، ثم بعدها يريد الغزو، أو بأن حكم الغزو والهجرة واحد، فإذا لم يجز الهجرة من غير إذن الوالدين لم يجز الغزو، هذا إذا لم يكن فرض عين، وأما إذا كان الفرض عينًا لا يحتاج إلى إذن أحد…….

في “شرح السنَّة” (4): هذا في جهاد التطوع، لا يخرج إلَّا بإذن الوالدين إذا كانا مسلمين، فإن كان الجهاد فرضًا متعينًا فلا حاجة إلى إذنهما، وإن منعاه عصاهما وخرج، وإن كانا كافرين فيخرج بدون إذنهما فرضًا كان الجهاد أو تطوعًا، وكذلك لا يخرج إلى شيء من التطوعات كالحج والعمرة والزيارة، ولا يصوم التطوع إذا كره الوالدان المسلمان أو أحدهما إلَّا بإذنهما، قال ابن الهمام: لأن طاعة كل منهما فرض عليه، والجهاد لم يتعين عليه. (بذل المجهود فى حل سنن ابى داود، كتاب الجهاد، باب فى الرجل يغزوا وأبواه كارهان-9/93-94)

عن أنس بن مالك رضى الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: طلب العلم فريضة على كل مسلم (سنن ابن ماجه، باب فضل العلماء والحدث على طلب العلم-1/20، رقم-224

বিঃদ্রঃ

তাবলীগ জামাতে যাবার আগে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, যেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওয়ারিস উলামায়ে কেরামের বিদ্বেষী দিকভ্রান্ত মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীদের হকবিচ্যুত তাবলীগ জামাতে জোড়ে না জান। উলামায়ে কেরামের তত্বাবধানে পরিচালিত তাবলীগ জামাতের সাথে দ্বীন শিখার নিয়তে বের হন। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন। আমিন। সূত্র: আহালে হক মিডিয়া

Leave A Reply

Your email address will not be published.