পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়ায় পরকীয়ার কারণে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা প্রেমিকাকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের অমৃতপাড়া গ্রামের মৃত আহসান আলীর পুত্র আমজাদ হোসেন (৩৫) কে বুধবার রাতে মোজাম্মেল হকের বাড়ীর পার্শ্বে অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় পুকুরে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তার বাড়ীতে খবর দেয়। খবর পেয়ে বাড়ীর লোকজন ও এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহত আমজাদ এর বড় ভাই কাশেম জানায়, আমি ভাটায় কাজ করি। বুধবার রাতে বাড়ীতে ফিরে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়ি। এ সময় গ্রামের লোকজন আমার বাড়িতে খবর দিলে টর্চ লাইট নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার ছোট ভাইকে আমার আতœীয় ও এলাকাবাসীরা একটি নসিমনে তুলছে। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তারা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
তিনি আরো জানান, একই গ্রামের মোজাম্মেলের এর স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩২) এর সাথে দীর্ঘ দিন সম্পর্ক থাকায় মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর মরিয়মের স্বামী সহ কয়েক জন মিলে আমজাদকে ধারলো অস্ত্র দারা কুপিয়ে হত্যা করে। ইতিপূর্বে আমার ভাইকে হুমকি দেওয়ার কারণে পুঠিয়া থানায় জিডি করা রয়েছে। আর আমার ভাই পুকুরে মাছ চাষের ব্যবসা করতো।
মরিয়ম বেগম জানান, আমার সাথে আমজাদের প্রায় ১৯ বছর থেকে সম্পর্ক। আমাদের ঘটনা আমার স্বামী জানতে পেরে আমাকে বাধা নিষেধ করে। ইতিমধ্যে আমার স্বামী আমজাদকে ৪০ হাজার টাকা ধার দেয়। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। বাকি ২০ হাজার টাকার জন্য আমাকে দিয়ে বুধবার রাতে ফোন করে আমজাদকে ডাকায়। সেই রাতেই আমজাদ আমার বাড়ীতে দরজায় এসে ডাক দেয়। এ সময় আমার স্বামী মোজাম্মেল এর সাথে আমজাদের কথা কাটা কাটি হওয়ার সময় আমজাদকে ধরে নিয়ে বহিরে চলে যায়। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে আমার মায়ের কাছে জানতে পারি যে আমজাদকে খুন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খায়ের জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে লাশটির সুরত হাল করি। এ সময় নিহতের ঘাড়ে, বুকে ও পেটে ধারালো অস্ত্রে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিব বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এ সময় মোজাম্মেলের স্ত্রী মরিয়মকে আটক করা হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন করেন। নিহতের ভাই কাশেম বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে।
Next Post